।। নিউজ ডেস্ক ।।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া কুড়িগ্রামের ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন পরীক্ষার্থী পাস করেনি। এমন ফলাফলে ওই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।
রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ আলীর স্বাক্ষরিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এবারে দিনাজপুর বোর্ডের অধীন মোট ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। যার মধ্যে কুড়িগ্রামের ৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, রৌমারীর দাঁতভাঙা মডেল কলেজ, উলিপুরের বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল এন্ড কলেজ, নাগেশ্বরীর সমাজকল্যাণ মহিলা কলেজ, ভূরুঙ্গামারীর মইদাম কলেজ ও রাজিবপুরের মোহনগঞ্জ আদর্শ কলেজ।
জানা গেছে, রৌমারীর দাঁতভাঙা মডেল কলেজে ১ জন, উলিপুরের বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল এন্ড কলেজে ৪ জন, নাগেশ্বরীর সমাজকল্যাণ মহিলা কলেজে ১ জন, ভূরুঙ্গামারীর মইদাম কলেজে ১ জন ও রাজিবপুরের মোহনগঞ্জ আদর্শ কলেজে ১১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করেনি।
মইদাম কলেজের অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী খোদেজা খাতুনের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, কলেজে তাদের মেয়ে একমাত্র শিক্ষার্থী হলেও ওই কলেজে ১২ শিক্ষকের কেউই ঠিকমতো কলেজে আসতেন না। ফলে কলেজে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। কলেজটি সদ্য এমপিওভুক্ত হওয়ার কারণে শিক্ষকরা এখন আসা যাওয়া করছেন।
সদ্য ঘোষিত এমপিওভুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া মইদাম কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বাবলু জানান, অকৃতকার্য শিক্ষার্থী খোদেজা খাতুন শুরুতে কলেজে নিয়মিত ছিলেন। পরবর্তীতে পরিবার থেকে বিবাহ দেওয়ায় ধীরে ধীরে কলেজে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ফলে পড়াশোনা ভালো করতে পারেনি। এই কলেজে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ১২ জন।
উলিপুরের বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজার রহমান জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পুরোনো। কিন্তু এইচএসসি ভর্তি শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। প্রতিষ্ঠানটি এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি এনটিআরসি থেকে ৬ জন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। সেসব শিক্ষকরা নিয়মিত কলেজে আসেন না। গত বছর কোন পরীক্ষার্থী ছিল না। এবার মোট চারজন ছেলে শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। তাদের ক্লাস ভালোভাবে হয়নি। এজন্য কেউ পাস করেনি।
কুড়িগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম বলেন, শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস না করা দুঃখজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার মান নষ্ট করছে। সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে বলে মনে করি। আমি ফলাফল দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, শতভাগ ফেল করা কলেজগুলোর ফলাফল যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।