।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে বিজ্ঞাপন আর রাজনৈতিক প্রচারণায় ছেয়ে গেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর মহাসড়কের পাশে থাকা বৃক্ষ। শুধু গাছ নয় বিজ্ঞাপনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীরও। এতে করে পরিবেশের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ ভারসাম্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আর গাছে গায়ে পেরেক ঠুকে লাগানো হচ্ছে পোস্টার ও ফেস্টুন। এসব দেখেও যেন নীরব প্রশাসন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা সড়কে লাগানো ছোট-বড় গাছের গায়ে লোহার পেরেক দিয়ে আটকানো হয়েছে অসংখ্য সাইন বোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড। বিভিন্ন গাছে ঝুলছে ব্যবসায়িক, চিকিৎসক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচার-প্রচারণার অসংখ্য ছোট-বড় সাইন বোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিজ্ঞাপন। পিছিয়ে নেই বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলোও। এক একটি গাছ যেন এক একটি বিজ্ঞাপন বোর্ডের খুঁটি। কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই যেখানে পারছে পেরেক ঠুকে গাছকে বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করছে।
পরিবেশবিদ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা মো: নাসির উদ্দিন বলেন, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয় তা দিয়ে পানি ও তার সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব প্রবেশ করে। এতে গাছে দ্রুত পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে করে গাছটি মারাও যেতে পারে। গাছের প্রতি এই নিষ্ঠুর আচরণ দেশের বন আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ জানান, জেলার মাসিক সমন্বয় মিটিং এ অবৈভাবে গাছে পোস্টার, ফেস্টুন ইত্যাদি লাগানোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এগুলো অপসারণে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম বিজিবি-২২ ব্যাটলিয়ন ক্যাম্প, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ও মহিলা কলেজ এবং আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের সামনে চিলমারী-কুড়িগ্রাম সড়কের দু’পাশে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো রয়েছে বড় বড় গাছ। আম, মেহগনি, অর্জুনসহ বিভিন্ন বৃক্ষের মধ্যে অসংখ্য পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সারিবদ্ধ এসব গাছের মধ্যে একটি মৃত আম গাছের মধ্যে লাগানো হয়েছে বিজ্ঞাপনের পোস্টার। নাগেশ্বরী উপজেলা পরিষদ চত্বরে নারকেল গাছসহ বিভিন্ন গাছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ফেস্টুন পেরেক দিয়ে লাগানো হয়েছে।
রাজারহাটের নাজিমখা সড়কে রাজারহাট পাইলট, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজের ভিতরে ও রাস্তার দু’ধারে ছোট-বড় গাছে শত-শত পোস্টার, ফেস্টুন এবং রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ভরে গেছে।
নাগেশ্বরীর বাসিন্দা মাহাবুব আলম বলেন, পুরো উপজেলার বিভিন্ন অফিস এবং গাছে শুধু নেতাদের ছবি দিয়ে পোস্টারে সাটানো। এতে করে সরকারি অফিসের সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে গেছে।