।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ব্রিজের পাখা ভেঙে গেছে। ফাটল ধরেছে বিভিন্ন অংশে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন মূহূর্তে ধসে পড়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে উলিপুরের নারিকেলবাড়ী বুড়ি তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি। এই ব্রিজ দিয়েই প্রতিদিন ঝুকি নিয়েই যাতায়াত করছে উলিপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডসহ ২টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ।
উলিপুরের নারিকেলবাড়ী বুড়ি তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি এমন বেহাল দশা দীর্ঘ চার বছর ধরে হলেও দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের জন্য কাউন্সিলর, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দাবি জানালেও আশ্বাসেই সময় পাড় করছে জনপ্রতিনিধিরা।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, প্রায় ৫৭ বছর পূর্বে ১৯৬৬ সালে নারিকেলবাড়ী বুড়ি তিস্তা নদীর উপর এই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ আন্দোলন ও সংগ্রামের পর বুড়ি তিস্তা প্রধানমন্ত্রীর ডেল্টা প্ল্যান কর্মসূচির আওতায় ১৬ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৮০ ফুট প্রস্থ ও ৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যব্যাপী ব্রিজটি গত ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ খনন কাজ শুরু করলে তা ওই বছরেই শেষ করে। তিস্তা নদীর একটি শাখা বুড়ি তিস্তা। খননের পর নদীর পানির প্রবাহ সৃষ্টি হলে ব্রিজটির প্রথম ফ্লোরের কিছু অংশ খসে যায়। কিছুদিন পর ব্রিজের একটি পাখা ধসে নদীতে পড়ে যায় ও বাকি তিনটি পাখায় মারাত্মক আকারে ফাটল ধরে। যা এখন ধীরে ধীরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ব্রিজটির বেহাল দশার কারণে ব্রিজের প্রবেশ মুখে বাঁশের খুঁটি পুতে রাখায় এই সড়ক দিয়ে ভারী কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে ওই এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য পরিবহন, কোথাও যাওয়া-আসা ও জরুরী রোগী বহন করা এখন খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্রিজটি ভাঙাচোরা ও জরাজীর্ণ অবস্থায় প্রায় দীর্ঘ চার বছর অতিক্রম করলেও কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয় নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আমরা শুনেছি এখন উলিপুর পৌরসভা “ক” শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। অতিদ্রুত ব্রিজটি নতুন ভাবে নির্মাণ করে পথচলা সুগম করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় দাবি জানান তারা।
পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান রাজু বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য বেশ কয়েকবার পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দেখানো হয়েছে। তারা দেখে ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের জন্য শুধু আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উলিপুর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, পৌরসভা থেকে এই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য কোন পরিকল্পনা নেই। আমি শুনেছি পিআইও অফিস থেকে ব্রিজটি নির্মাণ করার কথা।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু বলেন, ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করছি ব্রিজটি অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ করা হবে।
//নিউজ//উলিপুর//মালেক/নভেম্বর/০৫/২৩