।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
শরীর ফিট রাখতে চান না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই শরীরের কাঠামো ধরে রাখার জন্য শারীরিক কসরতের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করতে হবে। অনেকেই দেখা যায়, স্বাস্থ্য বাড়ার লক্ষ্যে খাওয়ার সময় পেট ভরে খাবার খেয়ে থাকেন। কিন্তু তারপরেও শরীরের স্বাস্থ্য বাড়ে না। আবার কেউ কেউ ঠিকমতো খাবার না খাওয়ার ফলে নিয়মের চেয়ে শরীরের ওজন কমে গিয়ে ওজনস্বল্পতায় ভুগে থাকেন। যে কারণে শরীর রোগারোগা দেখা যায়।
গবেষণায় জানা গেছে, মানুষের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশি হলে সেটা মানুষের আয়ু থেকে চার বছর কেড়ে নিতে পারে। তাই সঠিক ও উপযুক্ত খাদ্য নির্বাচন করে শরীরে নিয়মিত পরিমাণে প্রোটিন, শর্করা ও ফ্যাটের পয়োজন মেটানোর পাশাপাশি প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেলসে ভরপুর খাবার গ্রহণ করতে হবে।
ওজন না বাড়ার কারণ ও ওজন বাড়াতে করণীয় সম্পর্কে গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারের পুষ্টিবিদ সাজেদা কাশেম জ্যোতি বলেন, ওজন বাড়াতে হলে প্রথমেই জানতে হবে আপনার ওজন কম হওয়ার কারণ। তারপর একজন দক্ষ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে আপনার বিএমআই নিয়ম অনুযায়ী ক্যালোরির খাবার ও কোন খাবারগুলো খেতে হবে তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে ওজন বাড়ানোর জন্য খাবারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নীতিনির্ধারণ করা প্রয়োজন। যেমন- উচ্চ ক্যালরির, উচ্চ প্রোটিন, চর্বি ও উচ্চ শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যাদের ওজন কম তদেরকে প্রোটিন, শাকসবজি, ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। তাই প্রতিদিন খাবার তালিকায় ১ গ্লাস খাঁটি দুধ ও ১টি ডিম খেতে হবে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ওজন বাড়াতে যেসকল খাবার গ্রহণ করা জরুরীঃ-
★ বেশি বেশি শর্করা জাতীয় খাবার খেতে হবে। তাই পাউরুটি, বিস্কুট, আলু, নুডলস, মিষ্টি ফল ইত্যাদি খাবার দৈনিক খাবারের তালিকায় রেখে অধিক শর্করার পরিমাণ বাড়াতে পারি।
★ অধিক ক্যালরি সমৃ্দ্ধ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। ফলে প্রতিদিন সকালে ২টি রুটি বা ১টি তেলে ভাজা পরোটা খাওয়া জরুরী। হালুয়া, পুডিং, মিষ্টি, মাখন, জ্যাম, জেলি, কলা ইত্যাদি খাবারে অনেক ক্যালরি বিদ্যমান থাকে।
★ শরীরে প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ১ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। কিন্তু ওজন কম ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোগ্রাম আদর্শ ওজনের জন্য ১ গ্রাম- ১.২ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন পড়ে। তাই নিয়মিত ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, ডাল ও বাদাম খেতে হবে।
★ তরল জাতীয় খাবারের মধ্যে পানি, শরবত ও দুধ নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। তরল খাবার ওজন বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করাটাও অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
★ স্বাভাবিক সময় থেকে খাবারে উচ্চ পরিমাণে চর্বি জাতীয় খাবার বাড়াতে হবে। মাখন, তেল, ঘি, মেয়োনেজ ও দুধের সর ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু ফাস্ট ফুড বা জাংক খাবার পরিহার করে চলতে হবে।
★ প্রতিদিন খাবারের তালিকায় দই রাখতে হবে। কেননা পেটে খাবার ভালোভাবে হজমের জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে উপকারী ব্যাকটেরিয়া। যা দইয়ে পরিপূর্ণভাবে থাকে।
এছাড়াও ওজনস্বল্পতা রোধ করতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত পরিসরে যতটা সম্ভব শারীরিক ব্যায়াম করা দরকার। সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন ৪০ মি. হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।