।। লাইফস্টাইল ডেস্ক।।
ঘুমে থাকা অবস্থায় অনেক সময় শরীরের ওপরে ভারী কিছু রাখা হয়েছে বলে এরকম অনুভূতির সম্মুখীন অনেকেই হয়ে থাকেন। যাকে সাধারণত ‘বোবায় ধরা’ বলে। এই অবস্থায় হাত-পা নাড়ানো যায় না, বুকে ভারী লাগা অনুভবের ফলে ঠিকঠাক নিশ্বাস নিতে না পারা, ঘুম থেকে টের পেলেও, চাইলেও কোনো অংশ নাড়াতে পারে না, এমনকি চিৎকারও করতে পারে না। এমন অসহায় অবস্থার কয়েক সেকেন্ডকে যেন কয়েক ঘণ্টা বলে মনে হতে থাকে। মনে হয়, এই বুঝি তার দমবন্ধ হয়ে গেল।
চিকিৎসা বিষেজ্ঞরা সাধারণত এই সমস্যাকে ‘স্লিপ প্যারালাইসিস’ বলে থাকে। যেসব মানুষের ঘুমের সমস্যা থাকে, তারাই বেশিরভাগ স্লিপিং প্যারালাইসিসে ভোগে। তাদের কাছে ঘুম যেন হয়ে ওঠে আতঙ্কের কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস স্রেফ ইন্দ্রিয়ঘটিত ব্যাপার। যখন শরীর গভীর ঘুমের একটি পর্যায় থেকে আরেকটি পর্যায়ে প্রবেশ করে, তখনই এটি ঘটে থাকে। বোবা ধরলে একেকজনের একেক রকম অনুভূতি হয়। কেউ ঘরের ভেতর ভৌতিক কিছুর উপস্থিতি টের পান, কেউ দুর্গন্ধ পান, কেউ বা আবার ভয়ানক কোনো প্রাণী দেখতে পান। তাই দৈনিক ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম একজন সাধারণ মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি। কিন্তু, এই ঘুম যদি হয় কোনো ব্যক্তির আতঙ্কের কারণ হয়। তবে তা শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর।
স্লিপ প্যারালাইসিস কেন হয়?
স্লিপ প্যারালাইসিস হওয়ার পেছনে বিভিন্ন ধরণের কারণ থেকে থাকে। যেমনঃ মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব এবং অনিয়মিত ঘুমের কারণে স্লিপ প্যারালাইসিস হতে পারে। এছাড়াও প্রতিদিন একই সময়ে না ঘুমানো, দুশ্চিন্তা, ঘুমের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সমস্যা, হাত পায়ের মাংসপেশিতে খিচুনি, অনিদ্রা, বিষণ্নতা ইত্যাদি স্লিপ প্যারালাইসিসের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়।
বোবায় ধরা থেকে পরিত্রাণের উপায়ঃ
● বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস থেকে বাঁচতে রাতে অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
● নিয়মিত রাতে একই সময়ে ঘুমানো এবং সকালে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রতিদিনের ন্যায় ছুটির দিনেও এই অভ্যাস বহাল রাখতে হবে।
● দিনের বেলা লম্বা ঘুম বা না ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।
● রাতে ঘুম পেলে টেলিভিশন বা অন্য ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ট্যাব থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ এসব ডিভাইস ঘুমের বাধা হতে পারে। তাই এমন কোন বস্তু রাখা যাবে না।
● যে রুমে ঘুমাতে হবে সাধারণত সে রুমকে আরামদায়ক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা, যাতে ঘুম গভীর হয় এবং ঘুমে ব্যাঘাত না ঘটে।
● যদি কোনো কারণে স্লিপ প্যারালাইসিস হয়ে থাকে তাহলে নিজেকে বোঝাতে হবে যে ভয়ের কিছু নেই, কিছুক্ষণ পরে এই অবস্থা কেটে গিয়ে স্বাভাবিক হবে। উক্ত সময়ে শরীর অহেতুক নাড়ানো যাবে না বা নাড়াচাড়া করার চেষ্টা থেকেও বিরত থাকা জরুরি।