।। টেক ডেস্ক।।
ডিজিটাল বিশ্বে মানুষ অনলাইনকে যেমন দ্রুত ও সহজলভ্য করে তুলেছে ঠিক তেমনি অনলাইনে বেড়েছে সাইবার হামলা। অনলাইন ব্যবহারকারীরা সাধারণত যেসকল সমস্যার সম্মুখীন হয় তাদের মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক এবং হুমকিস্বরূপ হিসেবে র্যানসমওয়্যার অন্যতম । ক্রিপ্টোলকার সর্বপ্রথম ২০১৩ সালে আবির্ভাব হয়। এর পর থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা যেন র্যানসমওয়্যারের একটি নতুন যুগ দেখতেছে, যেখানে বিভিন্ন ধরণের স্প্যাম মেসেজ এবং এক্সপ্লয়িট কিটের মাধ্যমে উদ্দেশমূলকভাবে ব্যবহারকারী বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাছে এনক্রিপ্টেড ফাইল ছড়ানোর মাধ্যমে তাদের থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে। এর ফলে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা ব্যাহত করে।তাই র্যানসমওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বব্যাপী, সোফোসের প্রকাশিত ‘দ্য স্টেট অফ র্যানসমওয়্যার রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২২’ এ দেখা যায়, ২০২১ সালে বছর জুড়ে শতকরা ৬৬ ভাগের বেশি সংস্থা র্যানসমওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়েছিল, যা কিনা ২০২০ সালেও ছিল শতকরা ৩৭ ভাগ। যে কারণে এসকল প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদর এনক্রিপ্টেড ডেটা ফিরে পেতে ৮ লক্ষ ১২ হাজার ৩৬০ ডলার গড় মুক্তিপণ দিতে হয়েছিল।
চলুন জেনে নেয়া যাক র্যানসমওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকতে সর্বোত্তম যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্যঃ-
ফাইল এক্সটেনশন চালুর মাধ্যমে
ফাইল এক্সটেনশন চালু করার মাধ্যমে যেকোনো ধরণের ফাইল শনাক্ত করা আরও সহজ হয়ে ওঠে, যেসব সচরাচর ব্যবহারকারীকে পাঠানো হয়না, যেমন জাভাস্ক্রিপ্ট। আর ডিফল্ট উইন্ডো সেটিংস-এ ফাইল এক্সটেনশন চালু না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলো যেকোনো ফাইল শনাক্ত করতে থাম্বনেইলের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়।
অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের অধিকার পর্যবেক্ষণ
আইটি বিভাগের নিশ্চিত করা উচিত যে, তারা ক্রমাগত অ্যাডমিনস্ট্রেটর এবং তাদের অধিকারসমূহ পর্যালোচনা করছে। সেই সঙ্গে কার কাছে সেগুলো রয়েছে এবং যাদের প্রয়োজন নেই তাদের অধিকারগুলো যাতে থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া অ্যাডমিনস্ট্রেটর হিসেবে কেউ যেন প্রয়োজনের বেশি লগইন করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এমনকি কেউ অ্যাডমিন হিসেবে থাকা অবস্থায় অযথা ব্রাউজিং, যেকোনো ফাইল খোলা বা অন্য কাজ যাতে না করে সেবিষয়ে ও লক্ষ্য রাখতে হবে।
নিয়মিত ব্যাকআপ রাখুন
র্যানসমওয়্যার আক্রমণের ক্ষেত্রে এনক্রিপ্টেড ব্যাকআপ যেকোনো প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান সময় ও আর্থিক সংস্থান বাঁচাতে পারে। এজন্য অফলাইন ও অফসাইটে নিয়মিত ব্যাকআপ এবং আপডেট রাখা জরুরি। এটি আরও নিশ্চিত করবে ডিভাইসটি ভুল হাতে পড়লেও কোনো চিন্তা করতে হবে না।
অযাচিত অ্যাটাচমেন্ট থেকে সতর্ক থাকুন
র্যানসমওয়্যার আক্রমণকারীদের কাছ থেকে সুরক্ষিত থাকতে ব্যবহারকারীদের সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে কোনো অ্যাটাচম্টে ওপেন করা উচিত নয়। কোনো মেইলের নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মেইলটি ওপেন না করা এবং সন্দেহজনক কনটেন্ট হলে সে সম্পর্কে রিপোর্ট করার অভ্যাস তৈরি করতে হয়।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দেয়া
যদিও এটি তুচ্ছ শোনাচ্ছে, কিন্তু এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেকোনো দুর্বল এবং অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের খুব সহজেই প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্কে প্রবেশ করার সুযোগ প্রদান করে। এজন্য সুপারিশ করা হয়, যেকোনো পাসওয়ার্ড যেন কমপক্ষে ১২ অক্ষরের হয়, একই সঙ্গে এটি ক্যাপিটাল, স্মল লেটার, যতিচিহ্ন, সংখ্যা বা কোনো বিশেষ ক্যারেক্টারের মিশ্রণে হওয়া উচিত, যেমন: #৳@#Ju5t.LiKE#Th1s!@। তাহলে যেকেউ সহজে অনুমান করতে পারবে না।