।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
আর কিছুদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এজন্য প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উলিপুরের কারিগরেরা। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিযোগিতা চলছে কে কত ভালো প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের মন জয় করতে পারে। সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকা থেকে কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করছেন পূজামণ্ডপ কমিটি। এখন কেউ প্রতিমার কাঠামো তৈরি করছেন, কেউ বা কাঠামোতে মাটি লাগাচ্ছেন। এরপর শুরু হবে শুকানো প্রতিমাতে রং তুলির আঁচড় লাগানোর কাজ।
সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী ১৩ অক্টোবর হবে মহালয়া, ১৯ অক্টোবর হবে মহা পঞ্চমী, ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী তিথিতে শুরু হবে এ পূজা, আমন্ত্রণ ও অধিবাস পরদিন ২১ অক্টোবর সপ্তমী তিথিতে নব পত্রিকা প্রবেশন্তে সপ্তমী বিহিত পূজা, ২২ অক্টোবর মহা অষ্টমী ও সন্ধি পূজা, ২৩ অক্টোবর মহা নবমী পূজা এবং ২৪ অক্টোবর দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
বিভিন্ন পূজাম-পে ও প্রতিমা তৈরির কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, কাদা-মাটি, বাঁশ, কাঠ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দেবীদুর্গার প্রতিমা তৈরিতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা।
প্রতিমা তৈরির ব্যবসায়ী কারিগর গোবিন্দ রায় বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমার চাহিদা বেশি। গত বছর ৮টি প্রতিমা তৈরি করেছি। এ বছর ১০টি প্রতিমা তৈরি অর্ডার পেয়েছি। আরও ২-৩ তিনটি অর্ডার সময়ের অভাবে ফেরত দিয়েছি। বাজারে সব কিছুরই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত প্রতিটা প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় হয় প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। আমরা বিক্রি করি ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। দিন-রাত স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কাজ করেও এখন আর আগের মত লাভ হয় না।
আরেক প্রতিমা কারিগর কাশিনাথ চন্দ্র জানান, প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ টি প্রতিমা তৈরি করে থাকি। এবার শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক সমস্যার কারণে মাত্র ৫ টি প্রতিমা তৈরি করছি। তবে এবার বাজারে প্রতিমার চাহিদা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ উপজেলা শাখার সভাপতি পুর্ন চন্দ্র গোস্বামী বলেন, প্রতিটি পূজাম-পে সময়সূচি অনুযায়ী পূজা সমাপন ও চণ্ডীপাঠ করতে হবে। আযান ও নামাজের সময়সূচি মেনে চলতে হবে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা বলেন, মহা ধুমধামে এ বছর উপজেলায় প্রায় ১২০ থেকে ১২৫টি পূজাম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ বছর অস্থায়ী মন্দিরে পূজা উদযাপন হবে না।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মর্তুজা বলেন, পূজাম-পে গুলোতে কঠোর নিরাপত্তা থাকবে। যাতে কোথাও কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা না ঘটে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা তৎপর থাকবে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা যাতে প্রতিটি পূজাম-পে নির্বিঘ্ন এবং সুন্দরভাবে পুজা উদযাপন করতে পারে সেজন্য উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি থাকবে।
//নিউজ//উলিপুর//মালেক/অক্টোবর/০৮/২৩