।। নিউজ ডেস্ক ।।
নাগেশ্বরীতে চারণ বয়োবৃদ্ধ কবি রাধাপদ রায়ের উপর মূল হামলাকারী রফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত রফিকুল ইসলাম নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের কচুয়াপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের শেখ রাসেল অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি অনুষ্ঠান শেষে রফিকুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। অন্য আসামী কদুর রহমান এখনো পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। রাধাপদ রায় বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো: মাহফুজুল ইসলাম।
কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো: মাহফুজুল ইসলাম বলেন, রাধাপদ রায়ের উপর হামলাকারী মূল আসামী রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে খোঁজখবর নিয়েছি রফিকুল ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নেই। দু’পরিবারের পূর্ব শত্রুতার কারণে এই হামলা হয়েছে। এটা কোনো সাম্প্রদায়িক কিংবা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এই ঘটনা ঘটেনি। তবে এ ঘটনাটিকে কেউ রঙ মাখানোর চেষ্টা করলে প্রয়োজনে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাসে রাজধানী ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করার সময় কবির ছেলের সাথে পাওনা ৫০০ টাকা কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে নাগেশ্বরীর ভিতরবন্দে কবির বাড়িতে শালিস বসে। সেখানে তৃতীয় পক্ষ রফিকুল ও কদুর রহমান কবির বাড়িতে এসে গালিগালাজ করে যায়। এই ঘটনাসহ বেশ কিছু পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে দুই ভাই রফিকুল ও কদুর রহমান রাধাপদ রায়কে লাঠি দিয়ে মারধর করে। এতে রাধাপদ রায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাধাপদ রায়ের ছেলে ও স্বজনরা কবিকে উদ্ধার করে নাগেশ্বরী হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় কবির ছোট ছেলে জুগল রায় থানায় দুই ভাইয়ের নামে একটি মামলা করেন। পুলিশ বুধবার মূল অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামকে আটক করতে সক্ষম হয়।
রাধাপদ রায় জীবনে বেশি দূর পড়ালেখা করতে পারেনি। পড়েছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। নিজের লেখা গান ও কবিতা মানুষকে শুনিয়ে সামান্য উপার্জনে চলে তার সংসার। আঞ্চলিক ভাষায় তার লেখা গান ও কবিতাগুলো বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতোমধ্যে তার লেখা কবিতা ‘কেয়ামতের আলামত জানি কিন্তু মানি না’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত কবি রাধাপদ সরকারের নিজের লেখা আঞ্চলিক ভাষায় তিন শতাধিক গান ও কবিতা রয়েছে।