।। টেক ডেস্ক ।।
অনেক সময় স্মার্টফোন চার্জ দেওয়ার পর পোড়া গন্ধ নাকে পাওয়া যায়। বিষয়টি আমরা খেয়াল না করেই এড়িয়ে চলি। যে কারণে স্মার্টফোনের ব্যাটারি বিস্ফোরণের ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তবে জানেন কি? অমসৃণ নকল চার্জার ব্যবহারের কারণে এটি ঘটে থাকে। স্মার্টফোন কোম্পানিগুলি তাদের ফোনের সঙ্গে ফোন চার্জ দেওয়ার জন্য চার্জারও দিয়ে দেয়। কোনো কারণে চার্জার নষ্ট হলে বা দুর্ঘটনামূলক হারিয়ে গেলে আমরা যাচাই না করেই বাজার থেকে নতুন চার্জার কিনে নিয়ে আসি। এসব ভুয়া অমসৃণ নকল চার্জার দিয়ে যখন ফোন চার্জ দেওয়া হয় তখন চার্জারটি অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। এ থেকে আগুন লাগারও ঘটনা ঘটতে পারে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোনে চার্জ না দিতেই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা দোকানে চার্জার কেনার সময় আমাদেরকে অবশ্যই সতর্ক থেকে চার্জার কিনতে হবে।
চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক নকল চার্জার চেনার উপায়ঃ-
স্যামসাং: বাজারে গেলে স্যামসাং ফোনের উপযোগী বলে অনেক ভুয়া নকল চার্জার পাওয়া যায়। এই রকম চার্জার চিনতে হলে এর ওপরের লেখাগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। স্যামসাং ফোনের আসল ও নকল চার্জারের পার্থক্য খুঁজে বের করা বেশ কঠিন ব্যাপার। চার্জারের ওপর প্রিন্ট করা লেখা দেখে চার্জাটি আসল না নকল তা বুঝতে হবে। যদি চার্জারের ওপর ‘A+’ ও ‘মেড ইন চায়না’ লেখা থাকে, তাহলে সেটি ভুয়া চার্জার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
শাওমি: শাওমি ফোনের নকল চার্জার চিনার জন্য চার্জারের কেবলের দৈর্ঘ্য মাপতে হবে। চার্জার কেবলটিতে যদি দৈর্ঘ্য লম্বায় ১২০ সেন্টিমিটারের কম হয় বা অ্যাডাপ্টর বড় হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে চার্জারটি নকল।
হুয়াওয়ে: বাজারে হুয়াওয়ের নকল ও ভুয়া চার্জার অনেক পাবেন। হুয়াওয়ে ফোনের আসল ও নকল চার্জার চিনতে হলে আপনাকে হুয়াওয়ে বারকোডের সাহায্য নিতে হবে। হুয়াওয়ে চার্জারের বারকোডে থাকা তথ্যের সাথে যদি অ্যাডাপ্টরের বারকোড তথ্যের মিল পাওয়া যায় তবে বুঝতে হবে চার্জারটি আসল। আর তা যদি না পাওয়া যায় তাহলে বুঝবেন যে, চার্জারটি ভুয়া ও নকল।
ওয়ানপ্লাস: ওয়ানপ্লাস ফোনের আসল চার্জার চেনা খুবই সহজ। ফোনটি চার্জে দিলে ফ্ল্যাশ চিহ্ন দেখা যাবে। যদি তা না দেখা যায় এবং এর বদলে প্রচলিত ব্যাটারি চার্জ হওয়ার চিহ্ন দেখা যায় তাহলে বুঝবেন চার্জারটি নকল।
পিক্সেল: গুগল সব সময় তাদের পিক্সেল ফোনের সাথে ফাস্ট চার্জারের সুবিধা দিয়ে থাকে। যদি পিক্সেল ফোনে চার্জ হতে দীর্ঘ সময় নেয়, তাহলে বুঝতে হবে যে চার্জারটি নকল।
আইফোন: সবচেয়ে বেশি ভুয়া ও নকল চার্জার পাওয়া যায় আইফোনের। চার্জাগুলো এমনভাবে বানানো হয় যে, কোনটা আসল আইফোনের চার্জার এবং কোনটা নকল চার্জার তার পার্থক্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আসল চার্জারে ‘Designed by Apple in California’ লেখা থাকবে। ভুয়া ও নকল চার্জারের সাথে অ্যাপলের লোগোর মধ্যে পার্থক্য সহজেই ধরতে পারবেন। ভুয়া চার্জারের লোগো কখনো আসল চার্জারের লোগোর মতো হবে না। অ্যাপল লোগোটি ভুয়া চার্জারের মধ্যে গাঢ় ভাবে দেখা যাবে। তাই আইফোনের চার্জার কেনার সময় লোগো খেয়াল করে চার্জার কিনতে হবে।
এছাড়াও অন্যান্য সকল ব্র্যান্ডের ফোনের আসল ও ভুয়া নকল চার্জার চেনার জন্য চার্জার ফোনের সকেটে ঢোকানোর পর যদি সঠিকভাবে খাপ না খায়, তাহলে বুঝতে হবে চার্জারের পিনগুলো ভুল আকারে বানানো হয়েছে। বাজারে চার্জার কেনার আগে চার্জারের গায়ে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ডের নাম বা লোগো, মডেল, ব্যাচ নম্বর যাচাই করে কিনতে হবে। নিরাপদভাবে চার্জার ব্যবহারের নির্দেশনা থাকতে হবে। খুব কাছ থেকে চার্জারের পিনগুলো লক্ষ্য করলেই আসল-নকলের তফাত বোঝা যাবে। নকল চার্জার দিয়ে দিনে দুই-তিনবার ফোন চার্জ দিলেই খুব দ্রুত তা গরম হয়ে যায় এবং আসল চার্জার দিয়ে চার্জ দিলে দ্রুত গরম হয় না।