।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান দূর করে চিলমারী নদী বন্দর রমনা ঘাটে ভিড়ছে ফেরি কুঞ্জলতা। রমনা ঘাটে ফেরি নোঙ্গর করায় উল্লাসে মেতে উঠেছে এলাকার মানুষ। চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি সার্ভিস শুরু হচ্ছে এটি স্থানীয় মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। চিলমারী-রৌমারী মানুষের ভালোবাসার বন্ধন পাবে বৃদ্ধি এবং কুড়িগ্রামের সাথে দুরত্ব করবে রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেটসহ অনেক শহরের। কমবে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর চাপ। ব্যবসার প্রসার সাথে আয় বৃদ্ধি পাবে জেলার মানুষের। উন্নয়নের ছোয়া লাগবে এই অঞ্চলের গায়ে।
জানা গেছে, চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি সার্ভিস নিয়ে আলোচনা শুরু হয় বেশ কয়েক মাস আগে। আলোচনার সাথে এগিয়ে চলে কার্যক্রম। ফেরি কবে আসবে কবে শুরু হবে এর যাত্রা নিয়েও সংশয়ে ছিলেন উত্তরের মানুষ। স্থানীয়রাও ছিলেন হতাশায়। সকল জটিলতা কেটে অবশেষে আরিচা ঘাট থেকে রওনা করে ৪ দিন পর চিলমারী নদী বন্দর রমনা ঘাট এলাকায় শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় ফেরি কুঞ্জলতা নোঙ্গর করেছে। ফেরিটির কার্যক্রম বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি এর সমন্বয়ে চলবে।
ফেরি পৌঁছানোর আগে চিলমারী রমনা ঘাটে ফেরিতে যানবাহন উঠা নামার জন্য বিআইডব্লিউটিএ এর একটি পন্টুন এবং রৌমারী ঘাটে বিআইডব্লিউটিসি এর একটি পন্টুন কয়েকদিন আগে নিয়ে আসেন কর্তৃপক্ষ এবং তৈরি করেন সংযোগ সড়ক। ফেরি চলাচলের কথাটি যেমন মানুষকে আনন্দ এবং উল্লাসে ভরে দিয়েছে তেমনি নদের নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচলের বিঘ্নতা সৃষ্টি হতে পারে সেটি নিয়েও সংশয়ে স্থানীয়রাসহ জেলাবাসী। তবে ড্রেজিং করে চ্যানেল ঠিক রাখাসহ নিয়মিত ফেরি চলাচল করলে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট জেলার মানুষের সাথে ঢাকা, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকার দূরত্ব প্রায় শত মাইল কমে আসবে এবং দ্রুত পৌঁছাতে পারবে রাজধানীতেও। শুধু তাই নয় প্রসার ঘটবে ব্যবসা বাণিজ্যের, সফলতা পাবে হাজার হাজার মানুষ।
স্থানীয় নুর আমিন, আমিনুল, মমিনুল ইসলাসসহ অনেকে বলেন, আমরা সংশয়ে ছিলাম নদী বন্দরে বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে চালু হয়নি বন্দর তাই ফেরি নিয়েও সংশয়ে ছিলাম কিন্তু সেটি এখন আর স্বপ্ন নয়, ফেরিটি নদী বন্দর রমনা ঘাটে আসায় আমরা আনন্দিত। তারা আরও বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কুড়িগ্রাম-৪ (চিলমারী,রৌমারী ও রাজিবপুর) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জাকির হোসনের জন্য এবং প্রচেষ্টায় ফেরিটি পেয়ে ভাগ্যমান মনে করছি।
অবদানের জন্য চিলমারীর কৃতি সন্তান যুগ্মসচিব (বাজেট অধিশাখা) জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোঃ হারুন-অর-রশিদসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান এলাকাবাসী। এসময় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’কেও ধন্যবাদ জানান, এই অঞ্চলের মানুষকে মনে রাখার জন্য। ফেরি চালুর খবরে মানুষের মাঝে সাড়া ফেললেও ঘাটে কুলি শ্রমিকদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎকন্ঠা। বাড়ছে দুশ্চিন্তা।
ঘাটের কুলি শ্রমিকরা বলেন, আমরা তো মালামাল ও মোটরসাইকেল নৌকায় তুলে কিছু আয় রোজগার করতাম কিন্তু এখন তো সব ফেরিতে যাবে, আমাদের যে কি হবে।
তবে কুলি শ্রমিকের আয় কমবে না বরং বাড়বে তা জানিয়ে ঘাট ইজারাদার শহিদুল্লাহ কায়ছার ইমু বলেন, ফেরিটি চালু হলেই ঘাট সংশ্লিষ্ট সকলের আয়ের উৎস বাড়বে সাথে ব্যবসার প্রসার ঘটবে শতশত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ফেরিটি চিলমারী বন্দর রমনা ঘাট থেকে ফকিরেরহাট এলাকা ও গুজিমারীর চর হয়ে রৌমারী রুটে চলাচল করবে।
কথা হলে বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক মাহফুজ আলম সজল বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর এটি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হবে। এসময় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (এমপি), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন (এমপি) স্যারসহ অনেকে উপস্থিত থাকবেন। তিনি আরও জানান, ফেরি চলাচলের জন্য যেন বিঘ্নতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য নিয়োমিত ড্রেজিং করা হবে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/সেপ্টেম্বর /১৬/২৩