।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ফুলবাড়ীতে বারোমাসিয়া নদীর উপর নির্মিত দুই স্থানের বাঁশের সাঁকো ভেঙে চলাচলের চরম দুর্ভোগে হাজারও মানুষ। সাঁকো দুইটি ভেঙে যাওয়ার প্রায় দুই মাসেও মেরামত না করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও ব্রীজ নির্মাণ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী। যুগের পর যুগ স্থানীয়রা নিজস্ব উদ্যোগে সাঁকো দুইটি মেরামত করে চলাচল করে আসছেন। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের নরেবরে সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে প্রায় সময় ঘটে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। এই দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিষামত শিমুলবাড়ী এলাকায় নবিউলের ঘাটে বারোমাসিয়া নদীর উপর নির্মিত প্রায় ১শ মিটার লম্বা বাঁশের সাঁকোটি গত দেড় মাস আগেই বারোমাসিয়া নদীর তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে। ফলে পারাপারে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় ওই এলাকার বাসিন্দারা। এক বুক পানি সাঁতরে নদী পারাপার করছেন সেখানকার মানুষজন। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দেখে স্থানীয় ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে এলাকায় কিছু বাঁশ সংগ্রহ করে কাজ শুরু করলেও অর্থের অভাবে সাঁকো মেরামতের কাজ টুকুও এখন বন্ধ আছে বলে জানান কিষামত শিমুলবাড়ী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম। ভাঙা সাঁকোটি মেরামতের জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনের সূ-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
অপর দিকে একই ইউনিয়নের পশ্চিমফুলমতি বারোমাসিয়া নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি গত দুই আড়াই মাস আগে একই ভাবে ভেঙে যাওয়ায় সেখানকার হাজারও মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে। এখন জরুরি প্রয়োজনসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ছোট একটি ডিঙ্গি নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন।
পশ্চিমফুলমতি এলাকার ইব্রাহীম আলী, সিদ্দিক মিয়া ও মজিবর রহমান জানান, বারোমাসিয়া বা বাণিদহ নদীটি ধরলা নদীর একটি উপশাখা নদী। যা সরাসরি ভারত থেকে প্রবেশ করে উপজেলার মূল ধরলা নদীতে মিশে গেছে। ধরলা নদী এবং বারোমাসিয়া নদীর পানির রঙ সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে বারোমাসিয়া নদীটি আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করছে। নদীটি ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সীমান্তবর্তী মরাকুটি গ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডপ গ্রাম দিয়ে বয়ে গেছে। স্থানীয়ভাবে এটিকে বাণিদহ বা বারোমাসিয়া নদী বলা হয়ে থাকে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ কিলোমিটার। এই উপশাখা নদীর উপর দুটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। প্রতিবছর আমরা নিজেদের উদ্যোগ সাঁকোটি পারাপারের উপযোগী করি। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারিভাবে ব্রীজ নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়নি। আপাতত ভাঙা সাঁকোটি মেরামতের দাবি জানান এবং সেই সাথে একটি নতুন ব্রীজের দাবি জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ দ্রুত সময়ের মধ্যে সাঁকো দুইটি মেরামত করার আশ্বাস প্রদান করেছেন।
//নিউজ/ফুলবাড়ী//নূর-নবী/সেপ্টেম্বর/১৬/২৩