।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
বিশ্বজুড়ে অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর অন্যতম কারণ স্ট্রোক। যখন মস্তিষ্কের একটি অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয় বা যখন মস্তিষ্কের কোনো রক্তনালি ছিড়ে যায় তখনই স্ট্রোক হয়। সাধারণত ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি দেখা যায়। তবে, অল্পবয়সীদেরও স্ট্রোক হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ডেটা অনুযায়ী, ২০২০ সালে কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত প্রতি ছয়জনের একজনের মৃত্যু হয়েছে স্ট্রোকে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
স্ট্রোকের কারণ
নিউজ বাংলা২৪ এর এক প্রতিবেদনে অধ্যাপক শিরাজী জানান, উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ কোলেস্টেরল, চর্বি বেশি জমলে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বা মদ্যপান করলে, ধূমপান, তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন করলে, পরিবারের কারও রোগের ইতিহাস থাকলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সাধারণত ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষদের এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ কারণে মা, খালা, বাবা, চাচাদের মধ্যে কারও স্ট্রোক হয়ে থাকলে বয়স ৪০-এর বেশি হলে রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বয়স ৪০ বছরের কম হলেও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
লক্ষণ
স্ট্রোকের প্রভাবে শরীরের একাংশ দুর্বল হতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অঙ্গ-প্রতঙ্গ অসাড় হতে থাকে।
স্ট্রোক হলে তার প্রভাবে কথা জড়িয়ে যেতে পারে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে পায়ের জোরও কমতে থাকে।
শারীরিক ভারসাম্যের সমস্যা হতে পারে। এর প্রভাবে হাঁটা-চলায় সমস্যা হতে পারে। এই সময় পড়ে যাওয়ার ফল আরও খারাপ হতে পারে।
স্ট্রোকের প্রভাবে অসম্ভব মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। অনেক সময় দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসে। সামনের সবকিছু যেন আবছা দেখতে লাগে।
অন্যান্য অস্বাভাবিক লক্ষণ
স্ট্রোকের অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে অতিরিক্ত অস্থির লাগা, মাথা ঘোরা অন্যতম। কারও কারও স্ট্রোক হলে হঠাৎ বমি বমি ভাব এবং বমি হতে পারে। তবে এই লক্ষণগুলি সরাসরি স্ট্রোকের লক্ষণ নির্দেশ করে না, তারপরও এসব লক্ষণ উপেক্ষা করা ঠিক নয়। বরং এসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
স্ট্রোকের ঝুঁকি রোধে করণীয়
স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটা কমানোর উপায় হলো স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করা। যেমন: উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে জানা ও নিয়ন্ত্রণ করা। ধূমপান না করা এবং মদ্যপান না করা বা বিরত থাকা, নিয়মিত ব্যায়াম করা। এ ছাড়া শাকসবজি বেশি খাওয়া, মাখন বা ঘি কম খাওয়া, খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ কমানো, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, শরীরের ওজন ঠিক রাখা ও দুশ্চিন্তা না করার মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
এছাড়াও খাবারের তালিকায় শাকসবজি বেশি রাখতে হবে এবং তুলনামুলকভাবেই মাখন বা ঘি কম খাওয়া, খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। এর ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেই সাথে শরীরের ওজন ঠিক রাখা ও দুশ্চিন্তা না করার মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।