।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
পানি কমলেও ভাঙন বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র গিলতে শুরু করেছে চিলমারীকে। নেই যেন শান্তি। আছে শুধুই চোখের পানি। বছরের পর বছর চলছে ভাঙনের এই যুদ্ধ। কবে কোথায় কখন থামবে এই যুদ্ধ তা অজানা চিলমারীবাসীর। ভাঙন কবলিত বেশির ভাগ মানুষের নেই থাকার কোন স্থান, নেই একটু শান্তির আবাস। একটু সুখের আশায় আশ্রয়ের সন্ধানে প্রতি নিয়ত ছুটছে মানুষ। দিনের পর দিন নিঃস্ব করে দিচ্ছে এই নদী ভাঙন। আর সেই ভাঙনের শিকার হয়ে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে চিলমারীর শাখাহাতিসহ কয়েকটি গ্রাম। আর হুমকির মুখে পড়েছে সরকারি বিদ্যালয় ও আশ্রয়ণ কেন্দ্র। এছাড়াও ইতি মধ্যে কয়েকশত ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং মানুষকে বানিয়েছে অসহায়। প্রায় ২ শতাধিক পরিবার হয়ে পড়েছে গৃহহীন।
জানা গেছে, বছরের প্রতি সময় নদী ভাঙনের তাণ্ডব থাকে চিলমারীর বিভিন্ন স্থানে। পানি কমলেও থেমে থাকে না ভাঙনের তাণ্ডবলীলা। সেই তাণ্ডব প্রখর আকার ধারণ করছে বারবার পানি বৃদ্ধি, কমে যাওয়া, উজানের ঢলে ও বৃষ্টির সাথে সাথে। ব্রহ্মপুত্রের থাবায় চিলমারীর শাখাহাতি, কড়াইবড়িশালসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।নিমিষেই গিলে খাচ্ছে সবকিছু। ব্রহ্মপুত্রের এই তাণ্ডবলীলায় ভাঙছে ঘর-বাড়ি, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। মানুষকে করে দিয়েছে নিঃস্ব। ভাঙনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়িসহ লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পদ হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়ছে শতশত পরিবার। ব্রহ্মপুত্রের এই ভাঙনের মুখেই রয়েছে শাখাহাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাখাহাতি আশ্রয়ণ কেন্দ্রসহ বেশকিছু সরকারি স্থাপনা। ইতি মধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়েছে সাব মেরিন ক্যাবল ও বিদ্যুৎ খুটি।
সদ্য ভাঙনের শিকার আমজাদ, জাহানারা, ইসহাকসহ অনেকে বলেন, নদী আমাদের বসতবাড়ি কেড়ে নিল, কেড়ে নিল আমাদের সাজানো সংসার। তারা আরও বলেন, নদী আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে আর প্রশাসন ১০ কেজি করে চাল নিয়ে আইসে, হামরা ত্রাণ চাই না, চাই নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে।
ভাঙনের তাণ্ডব চলছে স্বীকার করে চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, যে হারে নদী ভাঙছে এর প্রতিরোধ না হলে চিলমারী ইউনিয়নের পুড়ো এলাকাসহ সরকারি স্কুল, আশ্রয়ণ কেন্দ্র নদী গর্ভে চলে যাবে। তিনি আরও বলেন, ইতি মধ্যে কয়েকশত ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাফিউল আলম বলেন, সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করেছি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে কিছু জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু করা হয়েছে, এছাড়াও ভাঙন ঠেকাতে পরিকল্পনা করা হয়েছে বরাদ্দ এলে কাজ শুরু করা হবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষনিক ভাবে কিছু জিও ব্যাগ ফেলানো হয়েছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু চরাঞ্চল হওয়ায় ভাঙন ঠেকানো বড় কষ্টকর।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/সেপ্টেম্বর/০৪/২৩