।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
উত্তর খাউরিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চিলমারী থেকে রৌমারীতে নেয়ার পায়তারা। ভবন ভেঙ্গে নেওয়ার নামে লুটপাট, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। এতে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। ভোট প্রদান থেকে বঞ্চিত হতে পারে প্রায় এক হাজার ভোটার। রয়েছে ভোট কেন্দ্র দখলে রাখার চেষ্টাও। এমন পরিস্থিতিতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও নীরব কর্তৃপক্ষ।।
জানা গেছে, চিলমারীর নয়ারহাট ইউনিয়নের উত্তর খাউরিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সদ্য নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মৌখিক নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের টিনশেড ভবনটি উত্তর খাউরিয়ার চর গ্রামের পশ্চিম পাশে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেন। এসময় খেরুয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু বক্কর ছিদ্দিক ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে উত্তর খাউরিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু হোসেন মোল্লা এর সহযোগিতায় প্রশাসনিক কোনো নির্দেশনা ছাড়াই বিদ্যালয়ের ভবনটি ভেঙে নেন এবং রৌমারীর শৌলমারী ইউনিয়নে চর খেদাইমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর পাশে একটি ঘর তোলেন এবং সেখানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালানোর জন্য চেষ্টা ও তদবির করছেন।
খাউরিয়ার চরের শিশু শিক্ষার্থী বিজয় শেখ, ছাব্বির ও শিরিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের এলাকার স্কুল আমাদের এলাকায় চাই, পড়তে চাই শিখতে চাই।’
স্থানীয় আঃ রাজ্জাক, আঃ মতিন, জোলেখাসহ অনেকেই বলেন, ‘বিদ্যালয়টি সঠিক স্থানে খাউরিয়ার চরে পুনঃনির্মাণ করা না হলে, শুধু তিন শতাধিক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়বে না, সাথে প্রায় এক হাজার ভোটারও ভোট প্রদান থেকে বঞ্চিত হবে।’
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জুলেখা ইয়াসমিন বলেন, ‘বর্তমান স্কুলের কার্যক্রম খাউরিয়ার চরের মোন্নাফ মিয়ার বাসায় চালাচ্ছি। সহকারী শিক্ষক আবু হোসেন মোল্লার সহযোগিতায় আবু বক্কর সিদ্দিক দলীয় ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বিদ্যালয়টি ভেঙে মালামাল লুটপাটসহ রৌমারীতে নেওয়ার চেষ্টা করছে।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়টি একটি ভোট কেন্দ্র, কেন্দ্রটি নিজেদের দখলে রাখতে নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ও ইউপি সদস্য মইনুল ইসলাম চিলমারীর বিদ্যালয়টি রৌমারী এলাকায় নেওয়ার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছেন।
আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী শিক্ষক আবু হোসেন মোল্লা বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী যা হওয়া দরকার সেটি আমারও দাবি।’
আবু বক্তর ছিদ্দিক তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘টিও, এটিও এবং ইউপি চেয়ারম্যান সকলে কাজ করেছেন এখানে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।’
প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে উত্তর খাউরিয়ার চর সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়টি উত্তর খাউরিয়ার চরে রাখা হোক এই দাবি জানান নয়ারহাট ইউনিয়ন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইনসাব আলী। এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানালে, তিনি আমার সাথে খুবই খারাপ আচরণ করেন বলে জানান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
কোন মন্তব্য না করে ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এটি শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়, যারা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তারাই দেখবেন।
কথা হলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু সালেহ্ সরকার বলেন, আপাতত পরীক্ষা চালানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে উক্ত স্থানে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, পরীক্ষা শেষ হলে এবং বন্যার পানি নেমে গেলে খাউরিয়ার চর এলাকায় বিদ্যালয় ভবন তৈরি করে কার্যক্রম চালানো হবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রুকুনুজ্জামান শাহিন বলেন, আপাতত রৌমারী এলাকায় বিদ্যালয়টি থাকলেও বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চিলমারীতে বিদ্যালয়টি নিয়ে আসবে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/আগস্ট/২৭/২৩