।। নিউজ ডেস্ক ।।
উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু করায় ৪র্থ দফায় কুড়িগ্রামের সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও তিস্তার পানি ৪৫ সেমি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ায় কয়েকটি চরে বন্যা দেখা দিয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১২টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৬ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৯০ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও নিচু চরাঞ্চলগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চর ও মাঝের চর, উলিপুরে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন জেগে উঠা মুসার চর ও বালাডোবার চরের ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তবে এখনও অন্যান্য চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নি।
এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম, চর খিতাবখা, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুড়া, রামহরি ও কালিরহাট এলাকায় দেখা দিয়েছে তিস্তা নদীর ভাঙন। এছাড়া ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে এবং ধরলার অববাহিকার মোগলবাসা ইউনিয়নের চরসিতাইঝাড় এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান মুন্সি রানা বলেন, তিস্তা নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার বাম তীরে ভাঙন চলছে। দেখার যেন কেউ নাই। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে তো অনেকে বাড়ি ঘর জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে অনেক মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
তিস্তা নদীর অববাহিকার গড়াই পিয়ার এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, তিস্তা নদীর পানি গতকাল থেকে হুহু করে বাড়ছে। আমরা এখানকার সবাই অনেক দুশ্চিন্তায় আছি। কেননা সবাই আমরা আমন আবাদ করেছি যদি সব নষ্ট হয়ে যায়। পানি বৃদ্ধির কারণে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে আমাদের।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার (২৮ আগষ্ট) পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এবং ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।