।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীতে ধান-চাল ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজস করে লুটপাটের মহাযজ্ঞ চালিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন গত ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর চিলমারীরতে সাব ইন্সপেক্টর (উপ-খাদ্য পরিদর্শক) হিসেবে যোগদান করেন। ইন্সপেক্টরের পদ শূন্য থাকায় তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে প্রায় তিন বছর ধরে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও গুদাম কর্মকর্তার মধ্যে মনোমালিন্য চলছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।
জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে চিলমারীতে এক হাজার ৪২৩ মেট্রিক টন চাল ও ৫৯০ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের কথা। গত ১৮ মে থেকে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। সরকারের নির্ধারিত ৩০ টাকা কেজি দরে ধান ও ৪৪ টাকা কেজি দরে চাল ক্রয় করা হয়। তবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চাল সংগ্রহ চলমান থাকলেও গত ১৫ আগস্ট থেকে ধান সংগ্রহ শেষ হয়। কিন্তু ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চাল সংগ্রহের সময়সীমা থাকলেও ইতিমধ্যে সব চাল ক্রয় করা হয়েছে বলে ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে বরাদ্দকৃত চালের প্রায় অর্ধেক পুরাতন ও ননসটার ক্রয় করেছেন ওই কর্মকর্তা। এসব ক্রয়কৃত পুরাতন ও ননসটার চাল খামাল দিয়ে তার চারিদিকে রেখেছেন কুড়িগ্রামের জয়মনিরহাট ও গাইবান্ধা থেকে আনা চাল।
পুরাতন চাল ক্রয়ের ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলাউদ্দিন বসুনিয়ার মধ্যে মনোমালিন্য চলছে বলে বিষয়টি উপজেলার সবার মুখে মুখে।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন ৫৯০ মেট্রিক টন ধানের সিংহভাগ ধান সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে গত ৩০ জুলাই একদিনে ১০৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করেছেন। এদিকে ক্রয়কৃত নিম্নমানের ধান ছাঁটাইয়ের জন্য উপজেলার ৩৯ জন মিলারের মধ্যে তার পছন্দের আটজন মিলারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে ধান-চাল সংগ্রহ করা হয়েছে, পুরাতন চাল ক্রয়ের অভিযোগটি অসত্য।
চিলমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আলাউদ্দিন বসুনিয়া বলেন, বাপ-ছেলের মধ্যেও মনোমানিল্য হয়। তবে পুরাতন চাল কেনার নিয়ম নেই। খাওয়ার অনুপযোগী ও নিম্নমানের হওয়ায় আমি অনেক চাল ফেরতও দিয়েছি।
ক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাফিউল আলম বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। আসার আগেই ধান-চাল ক্রয় শেষ হয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার সুযোগ হয়নি।
//নিউজ//চিলমারী//মালেক/আগস্ট/২৫/২৩