।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীর শাখাহাতি, কড়াইবড়িশালসহ বেশকিছু এলাকায় উজানের ঢলে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর সাথে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সংযোগ বিচ্ছিন্ন সাবমেরিন কেবল। অন্ধকারে শাখাহাত, বলমৈনদিয়ার খাতা, তেলিপাড়া, চুরুয়া পাড়াসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম, বিপাকে প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহক। ডুবে গেছে প্রায় তিনশত মিটার সংরক্ষণে রাখা সাবমেরিন কেবল। বিদ্যুৎ বিভাগের নজরদারির অভাবে ক্ষতির মুখে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, চিলমারীকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করার লক্ষ্যে উপজেলা সদর থেকে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্রের তলদেশ দিয়ে চিলমারী ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে জোড়গাছ বাজার থেকে প্রায় ৫কিঃ মিঃ নদীর তলদেশ দিয়ে ৩ লেনে শাখাহাতি চরের নেয়া হয় কেবল এবং এইচ পোলের মাধ্যমে সংযোগ করে চলাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সেই সময় প্রায় ৩শত মিটার কেবল এইচ পোলের পাশে সংরক্ষিত রাখা হয়।
চলতি মৌসুমে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় এইচ পোল ভাঙনের মুখে পড়লে তাৎক্ষণিক এলাকাবাসীর সহযোগীতায় ইউপি চেয়ারম্যান তা সরিয়ে নেয়। এইচ পোল সড়িয়ে নেয়া হলেও সংরক্ষিত রাখা কেবল সরাতে পারেনি। তবে কেবল উদ্ধারের জন্য এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান চেষ্টা চালিয়ে গেলেও পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্ধর্তন কোন কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত পরিদর্শনে যাননি বা চেষ্টা করছেনা বলে জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম।
এলাকার মিন্টু, মাইদুলসহ অনেকে বলেন, জীবনে কল্পনা করিনি আমরা চরের মানুষ কারেন্ট (বিদ্যুৎ পামো) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সেই স্বপ্ন পুরন করলো কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের চরম গাফলতির কারনে ইতি মধ্যে কয়েকটি বিদ্যুৎ খুটি নদীতে চলে গেছে এবং সংরক্ষিত সাবমেরিন কেবল গুলো নদী গর্ভে বিলীনের পথে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের বারবার জানিয়েও লাভ হচ্ছেনা জানিয়ে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকার যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করলো আর তা রক্ষার জন্য কোন উদ্যোগ না নিয়ে যেন তারা ঘুমিয়ে আছেন। তিনি আরও জানান, তাদের সঠিক কোন সহযোগী না পাওয়ায় স্থানীয়দের নিয়ে কেবল উদ্ধারের চেষ্টা করছি, জেনে শুনে তো সরকারের এতো টাকা ক্ষতি হতে দিতে পারি না।
এদিকে কেবল উদ্ধার না হওয়ায় গত দুইদিন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। তবে সাব মেরিন কেবল উদ্ধার করা না গেলে চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না সেই সাথে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করে পল্লী বিদ্যুৎ চিলমারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি তবে জলবল সংকট তা স্বীকার করেন।
কোন মন্তব্য না করেই কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চিলমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়ে জিএম সাহেবের সাথে কথা বলেন।
কথা হলে জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মহিতুল ইসলাম জানান, আমাদের লোকজন সেখানে কাজ করছে এবং সেখানে থাকার কথা জানিয়ে বলেন, ওখানের সবকিছু এখনো আমাকে জানায়নি ডিজিএম। তবে দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন জেনারেল ম্যানেজার।
এব্যাপারে কথা বলার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাফিউল আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায়নি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/আগস্ট/১৭/২৩