।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
হাতে বা পায়ে ঝি ঝি ধরা বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই পরিচিত। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝি ঝি ধরা বলে থাকি। আসলে দীর্ঘক্ষণ এক ভঙ্গিতে থাকলে এমনটি ঘটে। এক্ষেত্রে হাত-পায়ের পেশিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে যে স্নায়ু, তার উপরে চাপ পড়ে বলেই এমনটি ঘটে। তখন হাত-পায়ে শক্তি পাওয়া যায় না।
এই উপসর্গটিকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ‘প্যারেসথেসিয়া’। এটিকে ইংরেজিতে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ও বলা হয়ে থাকে। শরীরের যে অংশে ঝি ঝি ধরে, সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন একটি অনুভূতির তৈরি হয় যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে একসাথে ঐ অংশে খোঁচা দেয়া হচ্ছে। তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে।
ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির মতে, ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতির একটি স্নায়বিক উপসর্গের মধ্যে আছে হাত-পায়ের অসাড়তা ও ঝি ঝি ভাব।
স্বাস্থ্য সংস্থা বিএমজে’র মতে, যদিও নিউরোলজিক জটিলতার অগ্রগতি সাধারণত ধীরে ধীরে হয়, তবে ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতি হলে তা চিকিৎসার পরও উপসর্গগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরে উপস্থিত থাকে।
এ সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তির উপায়–
স্নায়ুকে চাপমুক্ত করুন: সংশ্লিষ্ট স্নায়ু থেকে চাপ দূর করলে ঝি ঝি অনুভূতি চলে যাবে। স্নায়ুকে চাপমুক্ত করতে শারীরিক ভঙ্গিতে (যেমন- পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকা অথবা বাহুতে ভার দিয়ে ঘুমানো) পরিবর্তন আনুন।
নড়াচড়া করুন: হাঁটলে অথবা নড়াচড়া করলে রক্তপ্রবাহ বাড়বে এবং ঝি ঝি ধরার অস্বস্তিকর অনুভূতি চলে যাবে। পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকলে ধীরে ধীরে হাঁটার চেষ্টা করুন অথবা হাতের ভার সরিয়ে নাড়াচাড়া করুন।
হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করুন ও খুলুন: আপনার হাতে বা বাহুতে ঝি ঝি ধরলে হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করুন ও খুলুন। প্রক্রিয়াটি কিছুসময় পুনরাবৃত্তি করুন।
পায়ের আঙুলকে উপর-নিচ করুন: আপনার পায়ে ঝি ঝি ধরলে পায়ের আঙুলগুলোকে নাড়াচাড়া করলে (বিশেষ করে উপর-নিচ করলে) উপকার পেতে পারেন।
যেসব ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণের জন্য ঝি ঝি হতে পারে:
➤ কেমোথেরাপির মত চিকিৎসার ক্ষেত্রে।
➤ এইচআইভি’র ওষুধ, খিঁচুনির ওষুধ বা বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে।
➤ সীসা বা রেডিয়েশনের মত বিষাক্ত বস্তুর সংস্পর্শে এলে।
➤ পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের অভাব হলে।
➤ স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে – বিশেষ করে কোনো অসুস্থতা বা আঘাতের পর।
➤ অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে।
➤ বিশেষ ক্ষেত্রে চেতনানাশক ব্যবহারের পর।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
দীর্ঘসময় ঝি ঝি ধরার মত উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। ঝিঁঝি ধরার মত উপসর্গ যদি দীর্ঘসময় ধরে হতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কোনো অঙ্গে নিয়মিত ঝিঁঝি ধরার ঘটনা ঘটলে বা বারবার ঝি ঝি ধরার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।