।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ফুলবাড়ীতে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গৃহবধূর মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারিসহ পরিবারটিতে চলছে শোকের মাতম।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর চাচা নাসির আলী রবিবার (১৩ আগস্ট) বিকালে বাদী হয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে আসামি করে ফুলবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহত গৃহবধূর নাম মৌসুমী খাতুন (২৫)। তিনি বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের মনছুর আলীর মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে একই ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে আশেক আলীর (২৮) এর সাথে প্রেম করে বিয়ে হয় মৌসুমী খাতুনের। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মনছুর আলী বিয়ের সময় জামাইকে এক লক্ষ টাকা দেন। কিন্তু জামাই আশেক আলী তার বাবা মায়ের পরামর্শে বাবার বাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য মৌসুমীর উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। মৌসুমী এতে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর চলে মারধরসহ অমানবিক নির্যাতন।
গত ৮ আগস্ট সকালে আশেক আলী মৌসুমীকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিলে মৌসুমী অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আশেক আলী মৌসুমীকে বেদম মারধর করে। খবর পেয়ে মৌসুমীর নানা জহুরুল ইসলাম, নানার ছোট ভাই জাহেদুল ইসলাম ও চাচা নাসির আলী গুরুতর আহত অবস্থায় মৌসুমীকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ফুলবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসার পর ১১ আগস্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে লালমনিরহাট জেলা সদরে নেয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা- নিরীক্ষা শেষে ১২ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪ টায় আবারও তাকে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিবাগত রাত ২ টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মৌসুমী খাতুন।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ জানান, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর চাচা নাসির আলী বাদী হয়ে স্বামী আশেক আলীসহ তিন জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিকালে কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
//নিউজ/ফুলবাড়ী//নূর-নবী/আগস্ট/১৩/২৩