।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়ায় অনেকেই ভুগে থাকেন। এটি কোনো রোগ নয়, বরং রোগের লক্ষণ। পৃথিবীর অন্তত ৩০ শতাংশ মানুষ রক্তশূন্যতায় ভোগে। ফলে এটি একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যা। বয়স ও লিঙ্গভেদে এই হিমোগ্লোবিন যখন কাক্সিক্ষত মাত্রার নিচে থাকে, তখন বলা হয় অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা।
রক্তশূন্যতা কি?
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানে অ্যাপোলো হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ জানান, “রক্তশূন্যতা মানে রক্তশূন্য হয়ে যাওয়া নয়। রক্ত একটি সম্পূর্ণ ব্যাপার। একে আমরা প্রচলিত কথায় বলি রক্তশূন্যতা। আসলে রক্তের মধ্যে তিনটি উপাদান আছে। লোহিত কণিকা, যেটি আমাদের রক্তকে লাল রাখে, আমরা কথা বলতে গেলে সাধারণত লোহিত কণিকাকেই বুঝি। কারো এক ব্যাগ রক্ত দিতে হবে এটি বলতে আমরা বুঝি তার লোহিত কণিকা লাগবে। আসলে শ্বেত কণিকা বা অনুচক্রিকা এর পেছনে রয়ে গেছে। রক্তশূন্যতা বলতে সাধারণত আমরা বোঝাই লোহিত কণিকার অভাব। আমরা রক্তশূন্যতা না বলে একে রক্তস্বল্পতাও বলতে পারি।”
কীভাবে বুঝবেন?
চোখ-মুখ ফ্যাকাশে মনে হওয়া, দুর্বলতা, ক্লান্তি, অবসাদ, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, মুখে-ঠোঁটে ঘা ইত্যাদি রক্তশূন্যতার সাধারণ লক্ষণ। রক্তশূন্যতার মাত্রা তীব্র হলে শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ লাগা এমনকি হার্ট ফেইলিউরও হতে পারে। রক্তশূন্যতা সন্দেহ করা হলে রক্তের একটি কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট করা জরুরি। এটি দেখে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ও লোহিত কণিকার পরিমাণ, আকার, রঞ্জক পদার্থের ঘনত্ব ও মান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক আরবিসি ইনডেক্স দেখে রক্তশূন্যতার কারণ অনুমান করতে পারেন। তবে প্রকৃত কারণ শনাক্ত করার জন্য পরে অন্যান্য পরীক্ষারও প্রয়োজন হয়।
চিকিৎসা কী?
গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে ডা. শামিমা ইয়াসমিন জানান, রক্তশূন্যতা হলে আয়রন বড়ি কিনে খেলেই হলো—এ ধারণা ঠিক নয়। রক্তশূন্যতার চিকিৎসার মূল বিষয় কারণটি খুঁজে বের করা। যেমন পেপটিক আলসার, পাইলস বা ক্যানসার শনাক্ত করা বা কেন মাসিকে বেশি রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তা খোঁজা। রোগীকে আয়রনের ঘাটতি পূরণে মুখে বড়ি দেওয়া হবে, না শিরাপথে আয়রন দেওয়া হবে, তা রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেন।