।। নিউজ ডেস্ক ।।
দরিদ্রতাকে হার মানিয়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে কঠোর পরিশ্রমে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শহিদুল ইসলাম আকাশ। তার বাড়ি উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের চিড়াখাওয়ার পাড় গ্রামে। তার বাবার নাম আমিনুল ইসলাম ও মা শিউলি বেগম। আমিনুল ইসলামের সহায় সম্বল বলতে কয়েক শতক বসত ভিটা। পেশায় তিনি একজন থ্রি-হুইলার চালক। তবে সেটি লক্কর-ঝক্কর হওয়ায় প্রায় দিনই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে যা আয় হয় সেটি মেরামত করতে তার থেকে বেশি ব্যয় হয়। হত-দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া অদম্য শিক্ষার্থী আকাশ পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সে পিএসসি ও জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
আকাশ জানায়, বাবার অভাবের সংসারে ঠিকমতো খেতেই পারতাম না। একটা জামা একটা প্যান্ট দিয়েই বছর পার করতাম। পরে মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করে চার-পাঁচ হাজার টাকা আয় হতো। তা দিয়েই আমার ও ছোট দুই বোনের পড়ার খরচ এবং কোন রকম পরিবার চলত। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি বাকিটা আল্লাহ্ ইচ্ছা করেছেন বলেই সম্ভব হয়েছে।
আকাশের মা শিউলি বেগম বলেন, ছেলের রেজাল্ট শুনে খুব ভালো লাগছে ওর জন্য গর্ব হচ্ছে। ওর বাবার পুরোনো একটি জেএসএ (থ্রি-হুইলার)। সেটি থেকে যা আয় হয় এতে আমাদের সংসার চলে না। এই বয়সে অন্য ছেলেরা পরিবারের টাকা ধ্বংস করে কত বাজে কাজ করে বেড়াচ্ছে। আর আকাশ এই বয়সেই সংসার চালানোর পাশাপাশি ভালোভাবে পড়াশোনা করছে। আজকে এমন একটা ভালো রেজাল্ট করে আমাদের সবার মুখ উজ্জ্বল করেছে।
পল্লী উন্নয়ন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, শহিদুল ইসলাম আকাশ খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী। তার পারিবারিক অবস্থা খুব খারাপ। হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলেও আকাশ আমার এখানে পড়াশুনা করেছে। তার অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাকে সর্বোচ্চ সহায়তা করা হয়েছে। আজকে সে জিপিএ-৫ পেয়ে বাবা-মাসহ সকলের মুখ উজ্জ্বল করেছে।
হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলাম বলেন, অভাবের মধ্যেও শহিদুল ইসলাম আকাশ ভালো রেজাল্ট করেছে। আমার বিদ্যালয়ে ৩২জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তার মধ্যে ২৫ জন পাস করেছে। একমাত্র শহিদুল জিপিএ-৫ পেয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/জুলাই/৩০/২৩