।। নিউজ ডেস্ক ।।
আবিলা বেওয়া আর্তনাদ করে কেঁদে কেঁদে জানান, ‘আমার ইতি কলিজা হুসকি যায়, মায়ের জাহানে কি মানে চোখের সামনে ছেলের কবর ভাঙি যায় নদীতে। কাইল আইতত বসি আছি তারে মধ্যে স্বামী, দেওর ও ভাইজতার কবর গুলা ভাঙি গেল বাবারে। ছেলের কবরখেন দেখিয়ে জীবনটা পাড় করবের চাছনু বা। কিন্তু নদী সেটাও করবের দিলে না। এখন সউগ নদীতে গেলো রে বাবা, এ্যালা হামরা কটে থাকমো আল্লায় জানে’। আবিলার বাড়ি উলিপুরের বজরা ইউনিয়নের পূর্ব বজরা গ্রামে।
শনিবার (২২ জুলাই) সরেজমিনে জানা গেছে, তিস্তা নদীর পানি কমতে থাকার কারণে আকস্মিক ভাঙন শুরু হয় বজরা ইউনিয়নের চর বজরা পূর্ব পাড়া এলাকায়। শুক্রবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই গ্রামের লাভলু মিয়া, মোনায়েম হোসেন ও ইসলাম মিয়ার বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের কবলে পড়েছে একটি আধাপাকা মসজিদ, কবরস্থানসহ আরও ১০-১৫টি বসত বাড়ি। যেকোন মুহূর্তেই নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে এসব স্থাপনা। এছাড়া চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে, চর বজরা পূর্ব পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ শতাধিক বসতভিটা।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। এ সময় আবিলা বেওয়ার ছেলের কবরটাও ভাঙনের কবলে পড়ে। মাঝরাতে কবর স্থানের পাশে বসে আবিলা বেওয়ার কান্নাকাটি শুরু করেন। এসময় আশপাশের মানুষ জড়ো হতে থাকে।
ওই ওয়ার্ডের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান বলেন, ৪ বছর আগে একবার এ এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। সেই সময় আমার বাড়ির অর্ধেকটা ভেঙে যায়। এরপর থেকে আর ভাঙন দেখা যায়নি। এছাড়াও আগে বহুবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোক মাপামাপি করে গেছে, তবে একটি বস্তাও ফেলেনি তারা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। মসজিদ ও কবরস্থানটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মসজিদ ও কবরস্থান রক্ষায় কিছু জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি চলছে।
//নিউজ//উলিপুর//মালেক/জুলাই/২২/২৩