।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুর সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উলিপুর ডট কমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে খাদ্য বিভাগ, নির্দেশ দেয়া হয় তদন্তের। তবে দায়সারাভাবে তদন্ত করার অভিযোগ উঠেছে খোদ তদন্তকারী কর্মকর্তা বিরুদ্ধে।
একটি সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম খাদ্য বিভাগ দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করে। তারা হলেন, সদর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হক এবং খাদ্য পরিদর্শক (কারিগরি) আ. জ. ম হাবিবুল হক। বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় সরেজমিনে তদন্ত করতে যায় উলিপুর খাদ্য গুদামে। তদন্তকালীন সময় মিল চাতাল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকায় সুষ্ঠু তদন্ত নিয়েও জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর রাতে তদন্ত টিম ও মিল চাতাল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ মোটরসাইকেল যোগে বেরিয়ে যান। সূত্রটি আরও নিশ্চিত করে বলে, তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২১ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত উলিপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর আমলেও উলিপুরে মিল চাতাল মালিক সমিতির সিন্ডিকেট চক্রটি অসাদুপায় অবলম্বন করে সরকারের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল।
জানা যায়, উলিপুর সরকারি খাদ্য গুদামে সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা নানা কারসাজির মাধ্যমে ভূমিহীন, দিনমজুর ও অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের লটারিতে বিজয়ী দেখিয়ে তাদের নামে গুদামে ধান দিচ্ছে। তালিকার সূত্র ধরে উপজেলার ধামশ্রেণী, গুনাইগাছ ও থেতরাই ইউনিয়নসহ পৌরসভা এলাকায় অনুসন্ধান করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। লটারিতে প্রভাশালী সিন্ডিকেট চক্রের পরিবারের একাধিক সদস্য, প্রতিবেশি, বাড়ির কাজের লোকসহ অনেকেই রয়েছে। এছাড়াও প্রকৃত কৃষকের নিকট হতে এক থেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে কৃষিকার্ড সংগ্রহ করে চক্রটি খাদ্য গুদামে ধান দেয়। এসব অনিয়ম নিয়ে গত ১১ জুলাই উলিপুর ডট কম অনলাইনে ‘উলিপুরে কৃষকের বদলে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছে সিন্ডিকেট চক্র’ সংবাদ প্রকাশিত হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হক বলেন, বিধি অনুযায়ী ধান সংগ্রহ করা, প্রকৃত কৃষক ধান দিয়েছে এবং বিল উত্তোলন করেছে কি না সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি। রাতের তদন্তের বিষয়টি তিনি স্বীকার করে বলেন, আমাদের নিজের অফিসিয়াল কাজ শেষ করে পৌঁছতে দেরি হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন এলএসডি গোডাউন ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে।
কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাছান বলেন, তদন্ত নয় অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে। তাঁরা সরেজমিনে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রতিবেদন জমা দিলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মে থেকে চলতি মৌসুমে আমন-বোরো খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। সরকারের নির্ধারিত ৩০ টাকা কেজি দরে লটারিতে বিজয়ী প্রতি কৃষক তিন টন করে ধান দিতে পারবেন। ধান-চাল সংগ্রহ চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
//নিউজ//উলিপুর//মালেক/জুলাই/২০/২৩