।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে বাড়তে থাকা নদ-নদীর পানি অনেক পরিমাণে কমে গেলেও কমেনি বন্যাকবলি মানুষজনের ভোগান্তি। বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইতে থাকা দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানিও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু এখনও নিম্নাঞ্চলে পানি অবস্থান করায় মাঠের ফসল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। মৎস্যচাষীদের অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, শনিবার (১৫ জুলাই) বিকেলে দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪ সেমি ও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২১ সেমি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি প্রবাহও নিম্নমুখী।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, চলতি বন্যায় এখন পর্যন্ত ৬৫০টি পুকুরের ১৩০ মে.টন মাছ ভেসে গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, বন্যার কারণে মাঠে অবস্থিত ফসলের মধ্যে ১ হাজার ৪৮৭ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে শাক-সবজি ২৬২ হেক্টর, আউসধান ২৪৪ হেক্টর, বীজতলা ৩৮০ হেক্টর, কলা ২০ হেক্টর এবং পাট ৫৮১ হেক্টর। এরমধ্যে শাকসবজি পুরোটাই বিনষ্ট হয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে বাকী ফসলের ততটা ক্ষতি হবে না।
জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম জানান, বন্যার কারণে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন অফিস তার সরবরাহকৃত তথ্যে জানিয়েছে, চলতি বন্যায় ৪৫টি ইউনিয়নের ১৮৫টি গ্রাম সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বন্যা কবলিত হয়েছে ৬১ হাজার ৪৫জন মানুষ। জেলার ৩৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৮০টি পরিবারের ৩শ’জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য ৩৬৩ মে.টন চাল, সাড়ে ৮লক্ষ টাকা ও ২২হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১০ মে.টন চাল, ১০ লক্ষ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার অতিরিক্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে।