।। নিউজ ডেস্ক ।।
নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সেতু বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলা গাছের ভেলায় পারাপার হতে হচ্ছে। বিকল্প সেতুটি ফুলবাড়ী উপজেলা সদর হতে এক কিলোমিটার দূরে নীলকমল নদের উপর বাস্তবে থেকেও কোনো কাজে আসছে না মানুষজনের।
ফুলবাড়ি উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য ফুলবাড়ি ইউনিয়ন, বড়ভিটা ও ভাঙামোড় ইউনিয়নের প্রায় ১০হাজার মানুষকে সেতুটি ব্যবহার করতে হয়। গত কয়েক মাস আগে ওই এলাকায় পুরোনো সড়ক বিভাগের সেতুটি ভেঙে নতুন সেতুর কাজ শুরু করে হাসান টেকনো নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মানুষের চলাচলে ভোগান্তি কমাতে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে তৈরি করা হয় বিকল্প সেতুটি। ওই সময় নিচু জায়গায় সেতু নির্মাণে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন জনগণের আপত্তির তোয়াক্কা না করে নিচু জায়গাতেই বিকল্প সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। ফলে ওই নিচু সেতু দিয়েই মালামাল পরিবহনে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয় স্থানীয়দের। নির্মাণের পর থেকে ভোগান্তি নিয়ে পারাপার হতে পারলেও বর্তমানে বন্যারর পানিতে বিকল্প সেতুটি ডুবে গেছে। নদ পারাপারে ভরসা এখন কলা গাছের ভেলা। বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। স্থানীয়দের মতে দ্রুত এখানে ব্যবস্থা না নিয়ে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের গার্ডার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান টেকনো। চুক্তি মোতাবেক ১৫ নভেম্বর ২০২২ তারিখ কাজ শুরু করেন যা ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। তবে সড়ক বিভাগ বলছে কাজের যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই সেতুর নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।
বড়ভিটা ইউনিয়নের হাসান আলী বলেন, ফুলবাড়ি ইউনিয়ন, বড়ভিটা ও ভাঙামোড় ইউনিয়নের প্রায় ৫হাজার মানুষকে ফুলবাড়ি উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য এই সেতু পারাপার হতে হয়। নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সেতুটি দায়সারা ভাবে করা হয়েছে। তাই বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে আমরা। বর্তমানে এখানে কলা গাছের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকি নিয়ে কলা গাছের ভেলায় পণ্য পরিবহনে সৃষ্টি হয়েছে অচলবস্থা। । পারাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাই।
এ নিয়ে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছি। আসলে আচমকা পানি বৃদ্ধির ফলে বিকল্প সেতুটি তলিয়ে গিয়ে মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। পানি কিছুটা কমেছে। দু-তিন দিনের মধ্যেই সেতু থেকে পানি নেমে যাবে বলে আশা করছি। পানি নেমে না গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে যাতে মানুষের ভোগান্তি কমবে।