।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
১৯৯৫ সাল থেকে যাত্রা শুরু আর তখন থেকে নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে গোলাম হাবিব মহিলা ডিগ্রী কলেজ। মনোরম পরিবেশে পাঠদানে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে হাজারো শিক্ষার্থী। ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত চিলমারীর নারী শিক্ষার প্রসারে ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে আলো ছড়াচ্ছে গোলাম হাবিব মহিলা ডিগ্রী কলেজ। কিন্তু প্রশাসনিক ভবন না থাকায় নানামূখী সমস্যায় ভুগছেন শিক্ষক কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা। কলেজটিতে প্রশাসনিক ভবনের দাবী দীর্ঘদিনের।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ গোলাম হাবিব এলাকার শিক্ষানুরাগী ও উচ্চ শিক্ষিত বেকারদের সাথে নিয়ে ১৯৯৫ সালে গোলাম হাবিব মহিলা ডিগ্রি কলেজটি প্রতিষ্টিত করেন। কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করায় চিলমারীর গরিব-অসহায় পরিবারের উচ্চ শিক্ষা বঞ্চিত মেয়েরা সহজে পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে এলাকার নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে। তাদের অনেকেই আজ সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত।
এছাড়াও অনেকে শিক্ষিত মা হয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করছেন সন্তানদের। ফলে এলাকার নারী শিক্ষা বিস্তারে কলেজটির ভূমিকা সর্বত্র প্রশংসিত। বর্তমানে কলেজটিতে নিয়মিত উচ্চমাধ্যমিক, কারিগরি কোর্স, ডিগ্রি কোর্স বিএ, বিএসএস, বিএসসি, বিকম চালু রয়েছে। নিয়মিত শিক্ষার পাশাপাশি বাংলাদেশ উনম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি, বিএ, বিএসএস প্রোগ্রামে এ মহিলা কলেজে অধ্যায়ন করছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত চিলমারীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম অক্ষুন্ন রেখে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কলেজে প্রতিবছর এইচ এস সি পরীক্ষায় রেকর্ড সংখ্যক বৃত্তি এবং জিপিএ-৫ পেয়ে ভালো ফলাফল করে উপজেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি যুদ্ধে স্থান করে নিচ্ছে এ কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এলাকার নারী শিক্ষার প্রসারে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে অবদান রাখা এই কলেজটিতে বর্তমানে সহস্রাধীক ছাত্রী অধ্যায়নরত রয়েছেন। কলেজটিতে আছে সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞানাগার, মিলনায়তন, ডিজিটাল হোয়াইট বোর্ড, গ্রন্থাগার, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার, নামাজের স্থান, শিক্ষার্থীদের বিশ্রামাগার। খেলার মাঠসহ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে কলেজটি শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসা এই কলেজটি ইতোমধ্যে নারী শিক্ষায় মডেল হয়ে ওঠেছে। কলেজটিতে নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য অনার্স কোর্স চালু ও প্রশাসনিক ভবনের দাবী শিক্ষার্থীদের। প্রশাসনিক ভবন ও অনার্স কোর্স চালু হলে সর্বক্ষেত্রে নারী শিক্ষার প্রসারে প্রতিষ্ঠানটি আরো এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অধ্যক্ষ মোঃ জাকির হোসেন বলেন, নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে মানুষ গড়ার কারখানা হিসেবে চিলমারী উপজেলার মুখ উজ্জ্বল করেছে এ কলেজটি। আমরা চেষ্টা করছি প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে। তিনি আরো বলেন, নারী শিক্ষায় এই কলেজটির অবদান অনস্বীকার্য, কিন্তু প্রশাসনিক ভবন না থাকায় শিক্ষক কর্মচারীদের বসার স্থান ও শুষ্ঠুভাবে কলেজ কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পরেছে। প্রশাসনিক ভবন চেয়ে আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত ভবন পাইনি।
কথা হলে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কমিটির সভাপতি সাবেক এমপি গোলাম হাবিব বলেন, নারীদের আলাদা ভাবে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের জন্য কোন শিক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেকের সহায়তায় মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠা করি।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/জুন/২৪/২৩