সালমান আজাদ, দুর্গাপুরঃ
কুড়িগ্রাম জেলার অন্তর্গত উলিপুর উপজেলার অন্যতম ব্যস্ত রেল ষ্টেশনের মধ্যে পাঁচপীর ষ্টেশনের নাম সবার আগেই চলে আসে। এটি উলিপুরের দুর্গাপুর ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত।উল্লেখ্য যে এটি উইকিপিডিয়ার কুড়িগ্রাম নিবন্ধ অনুসারে এটি উলিপুরের একটি দর্শনীয় স্থান এবং এর পেছনের কারণ হল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী মিলিটারি এই ষ্টেশন অফিস এবং “গেস্ট হাউস” গুলোকে তাদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
এই ষ্টেশনে বর্তমান তিনজন লোক কর্মরত আছেন। প্রতিদিন অসংখ্য লোক এখান থেকে যাতায়াত করে বিভিন্ন অঞ্চলে – এদের মধ্যে রংপুর, পার্বতীপুর সহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগের এই ট্রেন সার্ভিসের ভূমিকা অনেক। বিশেষ করে দুর্গাপুর সহ বুড়াবুড়ী, পান্ডুল ও অন্যান্য এলাকার লোকের যাতায়াতের অন্যতম সহজলভ্য মাধ্যম এই ট্রেন এবং এই সকল এলাকার নিকটতম রেল ষ্টেশন এটি।
প্রতিদিন বুড়াবুড়ী অঞ্চল হতে প্রচুর পরিমাণ বাঁশের চাটাই ঢাকা-চট্রগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পাঠানো হয় । এই ষ্টেশনের ব্যস্ততম সময় হল সকাল বেলা এবং দুপুরবেলা । নিম্মে ট্রেনের সময়সূচী উল্লেখ করা হল –
পাঁচপীর ষ্টেশন হতে অন্যান্য গন্তব্যস্থানের দূরত্ব নিম্মে উল্লেখ করা হল –
গন্তব্য ষ্টেশন | দূরত্ব |
উলিপুর | ১০ কিঃমিঃ |
বালাবাড়ী | ১৮ কিঃমিঃ |
রমনা বাজার | ২০ কিঃমিঃ |
কুড়িগ্রাম | ১৫ কিঃমিঃ |
টগরাইহাট | ২১ কিঃমিঃ |
রাজারহাট | ২৫ কিঃমিঃ |
শিঙ্গারডাবরীরহাট | ২৯ কিঃমিঃ |
তিস্তা | ৩৭ কিঃমিঃ |
কাউনিয়া | ৪১ কিঃমিঃ |
মীরবাগ | ৪৯ কিঃমিঃ |
রংপুর | ৫৯ কিঃমিঃ |
শ্যামপুর | ৭৩ কিঃমিঃ |
বদরগঞ্জ | ৮২ কিঃমিঃ |
খোলাহাটি | ৯০ কিঃমিঃ |
পার্বতীপুর | ৯৮ কিঃমিঃ |
তবে বৃহত্তর জনগণের স্বার্থের দিক না দেখে রেলের সেবার মান না বাড়িয়ে দফায় দফায় ভাড়া বাড়ানোটা রেলের জনপ্রিয়তা হারনোর কারণ হয়ে দাড়াতে পারে । যাত্রীভাড়া সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও মালের ভাড়া অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে চাটাই ব্যবসায়ী এবং তৈরিকারী ব্যক্তিরা চাটাই তৈরি এবং ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার/এর বিকল্প পেশা খুজতে বাধ্য হচ্ছে । ষ্টেশনের বিভিন্ন অসুবিধার মধ্যে অন্যতম হল – এটি জেলার অন্যতম ব্যস্ত ষ্টেশন হলেও এতে এখন বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা নেই , নেই ভাল যাত্রী ছাউনি বা গেস্ট হাউস। অন্যদিকে পুরোনো গেস্ট হাউস বা অফিসারস হাউজ গুলোও এখন সাধারণের বাসাবাড়িতে পরিণত হয়েছে । ট্রেন সার্ভিসের বিভিন্ন অসুবিধার মধ্যে অন্যতম হল নিয়মিত শিডিউল বিপর্যয় এবং অনিশ্চিত যাত্রীসেবা, তাছাড়া এই ট্রেনে টিকিট চেকার না থাকায় বেশীরভাগ যাত্রী টিকিট কিনতে অতি অনাগ্রহী । ফলে রেল ব্যবস্থা শীঘ্রই ক্ষতির মুখে পড়ার সম্ভাবনা প্রচুর। তবে অনেক যাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেছে যাত্রীসেবার মান সুনিশ্চিত করলে যাত্রী নিজ উদ্যোগেই টিকিট ক্রয় করতে আগ্রহী হবে, অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের এই অবহেলিত জনপদ কুড়িগ্রামের জনগণের প্রাণের দাবি হল রমনা টু কমলাপুর “ভাওয়াইয়া এক্সপ্রেস” নামক আন্তঃনগর ট্রেনের।