।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ফুলবাড়ীতে ৬০ বছরের এক বিধবাকে রাতের আঁধারে শারীরিক নির্যাতন করে নগদ অর্থ ছিনতাই ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ি গ্রামের দোলাবাড়ি বটতলা এলাকায়। নির্যাতনের শিকার ওই মহিলাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছে পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জুয়েল রানা (২৭) নামের ওই যুবকের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করেছেন নির্যাতিতার পরিবার।
নির্যাতিতার পরিবার জানায়, ওই বিধবার ছেলে মারা যাওয়ার চারমাস হলো। পুরুষ শূন্য হওয়ার সুযোগ নিয়ে ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াই-তিনটার দিকে জুয়েল এসে বৃদ্ধার ছেলের বৌয়ের ঘরের দরজায় বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে ওই বৃদ্ধার ঘরে ঢুকেছিল। এসময় ওই বৃদ্ধাকে বেধরক মারপিট করে আহত করার পর গরু বিক্রয়ের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনতাই করে ও যৌন হয়রানি করে। বৃদ্ধার শোর চিৎকার শুনেও ছেলের বৌ ঘর থেকে বের হতে পারে নাই। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে জুয়েল পালিয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত জুয়েল উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ি গ্রামের বানিয়াটারী এলাকার নজরুল ইসলাম নজুর ছেলে। সে একজন মাদকসেবী ও মাদক চোরাচালান কারী। ইতিপূর্বে একাধিক বিধবা মহিলার বাড়িতে হামলা করে শারীরিক ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটিয়েছে। সে পুলিশ ও বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে এরকম অপকর্ম করার কারণে কেউ ওর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
স্থানীয় কামাল হোসেন, মানিক মিয়া, ওবায়দুল হক সহ একাধিক ব্যক্তি জানালেন, জুয়েল নিয়মিত হিরোইন ও ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করে। সারারাত জেগে এলাকায় পুরুষ শূন্য বাড়ীতে ও অসহায় বিধবা মহিলাদের ঘরে গিয়ে হামলা দেয়। গভীর রাত ও বৈরী আবহাওয়া হলে তার উৎপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এলাকার সবার ঘরেই মা বোন রয়েছে। ওর ভয়ে কেউ শান্তিতে ঘুমাতেও পারেন না। যেন সে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে পারে সেজন্য সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন শাবুল বলেন, এর আগেও আমার কাছে এরকম দুইটি ঘটনার অভিযোগ এসেছিল। স্থানীয় পর্যায়ে জুয়েলকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার পরিবেশই তৈরি হয় নাই। একারনে সে বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে। তার উপযুক্ত বিচার হোক এটা আমাদের সকলের চাওয়া।
এব্যপারে অভিযুক্ত জুয়েলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
//নিউজ/ফুলবাড়ী//নূর-নবী/জুন/২২/২৩