।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
নাগেশ্বরীতে বন্যায় ৪ ইউনিয়নের নদী অববাহিকার চরাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে এসব এলাকায় রাস্তা-ঘাট, বীজতলা, সবজি ও পাটক্ষেত। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার। বৃহস্পতিবার (২২ জুন ) সরেজমিন বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শনে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা হক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। অপরদিকে দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল রাতে পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। সকাল নয়টায় পানি কমে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম জানান, গতকাল বুধবার (২১ জুন) থেকে তুলনামুলক কম বৃষ্টি হওয়ায় তেমন পানি বাড়েনি। ফলে বন্যা পরিস্থিতি সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। তার আগেই প্লাবিত হয়েছে নারায়নপুর, বল্লভেরখাস, নুনখাওয়ার নদী অববাহিকার কয়েকটি চরাঞ্চলীয় গ্রাম। বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত বামনডাঙ্গার চরাঞ্চলীয় এলাকাসহ বেশকিছু পাড়া। কিছু বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করেছে। কোথাও বাড়ি-ঘরের উঠোন পর্যন্ত চলে এসেছে পানি। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, রোপা আমন বীজতলা, সবজি ও পাটক্ষেত। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। আমরা এখনো বানভাসিদের জন্য কোন বরাদ্ধ পাইনি। পেলে বিতরণ করা হবে। তবে ভিজিএফ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের বন্যা দুর্গতদের মাঝে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভিজিএফ চাল বিতরণ করতে বলা হয়েছে।
বামনডাঙার পাটেশ্বরীর মোজাম্মেল হক, সেনপাড়ার হরিদাস বলেন, বুধবার দুধকুমার নদের পানির তোড়ে তেলিয়ানীতে বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। এসব এলাকার কিছু বাড়ি ঘরে পানি ঢুকতে শুরু করছে। তলিয়ে গেছে ফসলী জমি, সবজি ক্ষেত। পুকুর তলিয়ে মাছ চাষিদের ক্ষতি হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ২২ ও ২৩ শে জুন দুদিন জেলার নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি হবে। এতে করে সাময়িক বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। তবে বড় ধরনের কোন বন্যা হবে না। কেননা মধ্যস্থল উচু হওয়ায় উজানের ঢল এসে দ্রুত নেমে যাবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া আছে। এছাড়া জনগণের দূর্ভোগ কমাতে সব উপজেলার ইউএনও এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫৪১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।
//নিউজ/নাগেশ্বরী//বিল্টু/জুন/২২/২৩