।। নিউজ ডেস্ক ।।
পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামে কোরবানীযোগ্য পশু প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষক ও খামারীরা। এ বছর জেলায় কোরবানী উপযোগী পশুর সংখ্যা ২লাখ ৭০হাজার ১৬৭টি আর চাহিদা ২লাখ ৮৫৩টি। সে হিসাবে উদ্বৃত্ত কোরবানীর পশুর সংখ্যা ৬৯হাজার ৩১৪টি।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: ইউনুছ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জেলায় কোরবানীর পশুর কোন অভাব নেই। বরং জেলা থেকে অন্য জেলায় উদ্বৃত্ত কোরবানীর পশু পাঠানো সম্ভব হবে। দাম গত বছরের থেকে সামান্য বৃদ্ধি পেলেও ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে।
কুড়িগ্রামে কোরবানীর ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে গরু-ছাগল বেচা-কেনা। হাটে উঠতে শুরু করেছে বাহারী রং ও নামের হৃষ্ঠপৃষ্ট বহু জাতের গরু-ছাগল। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সাধ্য অনুযায়ী কোরবানীর জন্য গরু-ছাগল কিনছেন ক্রেতারা। এদিকে গরুকে কোরবানীযোগ্য করতে পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারীরা। জেলায় ৯টি উপজেলার ৩টি পৌরসভাসহ ৭৩টি ইউনিয়নের গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে ২-৪টি করে ষাঁড়, বলদ কিংবা গাভি ও ছাগল পালন করে হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। এছাড়া বড় ছোট খামারী তো আছেই। এসব গরু ছাগল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার পশুর হাটে বিক্রি করা হবে।
জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট খামারীর সংখ্যা ৩২হাজার ৫৬৪টি। এসব খামারে ষাড় আছে ৭৪হাজার ৪৪৬টি, বলদ আছে ৫হাজার ৪৯৩টি, গাভী আছে ৩০হাজার ৩০৭টি এবং মহিষের সংখ্যা ৯১৩টি। যার মোট সংখ্যা দাড়ায় ১লাখ ১১হাজার ১৫৯টি। এছাড়া ছাগল রয়েছে ১লাখ ৩৫হাজার ৩২টি এবং ভেড়া ২৩হাজার ৯৭৬টি। অর্থাৎ সব মিলিয়ে জেলায় কোরবানীযোগ্য পশুর সংখ্যা দাড়ালো ২লাখ ৭০হাজার ১৬৭টি। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে ৬৯হাজার ৩১৪টি।
সরেজমিন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হরিশ^র এলাকার এ্যাপলো এ্যাগ্রো ফার্ম পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, এ ফার্মে ৭৮টি ষাড় আর ছাগল ৫০টি রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দফায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছে ২৮টি ষাড় ও ৩৫টি খাঁসি। এখানে সবচেয়ে বড় ষাড়ের ওজন প্রায় ৪শত কেজি। এর দাম হাকানো হয়েছে ২লাখ টাকা। আর সবচেয়ে বড় খাসির ওজন ২৫ কেজি। এর দাম হাকানো হয়েছে ২০ হাজার টাকা।
নাগেশ^রী উপজেলার সবচেয়ে বড় খামারী স্থানীয় ঠিকাদার হারিসুল বারি রনির আরশী এ্যাগ্রো ফার্মে ষাঁড়সহ শতাধিক গরু রয়েছে। তবে এ বছর কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছেন ৮০টি গরু। যেগুলোর প্রত্যেকটির ওজন ২৫০ কেজি থেকে শুরু করে ৭শ কেজি পর্যন্ত। আর এগুলোর দাম ১লাখ থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত।
ওই খামারের কর্মী আব্দুর রহমান জানায়, তাদের খামারে সাকিব খান নামের একটি ষাড়ের ওজন প্রায় ৭শ কেজি। এর দাম হাকানো হচ্ছে ১০লাখ টাকা। এছাড়াও রয়েছে ডিপজল, ফাটাকেষ্ট, কালা মানিকসহ বাহারী নামের গরু। এগুলোর ওজনের উপর নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরশী এগ্রো ফার্মের উদ্যোক্তা হারিসুল বারী রনি জানায়, তিনি একেবারেই অর্গানিক ও সাইলেস পদ্ধতিতে দেশীয় সুস্বাদু খাবার খাইয়ে গরুগুলোকে লালন-পালন করে কোরবানীযোগ্য করে তুলেছেন। যাতে করে কোরবানীর ঈদে মানুষ একদম সুষম ও ভেজালমুক্ত মাংস খেতে পারে।
বেরুবাড়ী ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়ি এলাকার আবুল হোসেন জানান, তিনি প্রতি বছর ৪-৫টি করে গরু মোটাতাজা করে কোরবানীতে বিক্রি করে বেশ লাভবাবন হয়ে আসছেন। এ বছরও তিনি ২টি গরুকে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। গো খাদ্যের মূল্য বেশী হওয়ায় দামও এবার একটু বেশী হবে বলে জানান।