মামুন রিপন, বনভোজন থেকে ফিরেঃ
সম্প্রতি কুড়িগ্রাম সমিতি ঢাকার বার্ষিক বনভোজন ২০১৬ আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। “প্রানের টানে-বনভোজনে-যাচ্ছি বনে”- এই শ্লোগান নিয়ে শুরু হয় বনভোজনের আয়োজন। ১৩ই ফেব্রুয়ারী ২০১৬ ইং তারিখে পুরনো ও নবীন সদস্যগণ এবং তাদের পরিবারবর্গ উপস্থিত হয়েছিল এ আয়োজনে। কুড়িগ্রাম সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, চলচ্চিত্র নির্মাতা, ডাক্তা্র, ইঞ্জিনিয়ার, অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য ও সাংবাদিক বন্ধু-বান্ধবগন সহ সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এটিকে ঢাকাস্থ কুড়িগ্রামবাসীর জন্য জমজমাট প্রাণের মেলায় পরিণত করেছিল। সকালে সংসদ ভবন (দক্ষিন প্লাজা) থেকে যাত্রা শুরু করে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, গাজীপুরের উদ্দেশ্যে বাসভ্রমণ, তারপর সবাই আমরা একত্রিত হলাম সেখানে। এরপর শুরু হল প্রথমে কুরআন তিলাওয়াত, কবিতা, আবৃতি এবং ছোট বড় সবার জন্য নানা ধরনের খেলাধূলা। এরপর মধ্যান্যভোজ, পুরষ্কার বিতরন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাফল ড্র এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠান।
কুড়িগ্রাম সমিতির এ পিকনিকে উপস্থিত হয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অবঃ) আমসা আমিন, কুড়িগ্রাম সমিতির চেয়ারম্যান মেজর (অবঃ) আব্দুস সালাম, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য রুহল আমিন, উত্তরবঙ্গ যাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা আব্রাহাম লিঙ্কন, চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী বীরবিক্রম, আইনজীবি আসাদুজ্জামান আনসারী, কুড়িগ্রাম সমিতির মহাসচিব সাইদুল আবেদিন ডলার, ঢাকা ওয়াসার ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হক, উলিপুর ডট কমের এডিটর ইঞ্জিনিয়ার রুপম রাজ্জাক, গণকমিটির সহ-সমন্নয়ক আঃ ছোবহান জুয়েল, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার মুশফিক বাবু এবং আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে বক্তাদের বক্তৃতায় পরিতৃপ্তি লক্ষণীয় ছিল। সবার কণ্ঠেই কুড়িগ্রাম সমিতির পিকনিকে উপস্থিত হতে পেরে ভালো লাগার তৃপ্তি ছিল।পরিচালক, শিল্পী, কলা-কুশলী সবাই একত্রিত হয়ে আনন্দ করেছে। অন্ততঃ বছরের একটি দিনে কুড়িগ্রাম সমিতি সবাইকে একত্রিত করতে পেরেছে বলে বেশ আনন্দ বোধ করছিলেন সবাই।
আমরাও খুব মজা করছিলাম। প্রোগ্রাম শেষেও অনেক মজা হয়েছে। বাসে করে ঢাকায় ফিরে এসেও যেন বাসায় আসতে ইচ্ছে করছিল না। একটা কথা না বললেই নয়, রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, কুড়িগ্রামের ব্যানারটি তে লেখা ছিল ঢাকা টু কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেন চাই। কুড়িগ্রাম সমিতির পক্ষ থেকে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিগণ ব্যানার হাতে স্লোগান দিয়ে সেদিন আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, কুড়িগ্রাম সমিতির দাবি তথা কুড়িগ্রামবাসীর প্রানের দাবি ঢাকা টু কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেন চাই। সেই সাথে রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির পক্ষে থেকে কুড়িগ্রাম সমিতিকে জানাই প্রানঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। এই সুন্দর আয়োজনটি যেন বারবার দেখতে পারি সেই দাবি তাঁদের কাছে।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান মূলতঃ ক্রান্তীয় পতনশীল পত্রযুক্ত বৃক্ষের বনভূমি। গাছে গাছে ঢাকা এই উদ্যানের প্রতিটি জায়গাই নজর কাড়ে। সারি সারি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে গিয়েছিলাম রুপম রাজ্জাক ভাই, জুয়ে্ল, সোহাগ, নাসির, ওয়াসি ও আমি। বিশ্রামের জন্য আছে আসন কিংবা ছাউনি ছিল। বনের মাঝে কোথাও কোথাও চোখে পড়বে ধানের ক্ষেত। কোথাও আবার পুকুর কিংবা লেক। মনে হবে হারিয়ে যাই দীর্ঘ সময়ের জন্য।
সুন্দর সময়ের স্মৃতি নিয়ে আগামীতে আবার একত্রিত হবার প্রত্যাশায় শেষ হয়েছে আমাদের এবারের বনভোজন। সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই।
মামুন রিপন
সাংগঠনিক সম্পাদক,
রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, কুড়িগ্রাম