।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে খাবার স্যালাইন পান করতে হয়। এর উপকারিতা অনেক। শরীরে প্রয়োজনীয় তরল পৌঁছে দিতে সাহায্য করে এই পানীয়। স্যালাইনে থাকে লবণ অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম ক্লোরাইড, গ্লুকোজ এবং ট্রাইসোডিয়াম সাইট্রেট৷ আমরা যে ওরস্যালাইনের প্যাকেট কিনে খেয়ে থাকি; তা আধা লিটার পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে হয়। অনেকেই অনেক অল্প পানিতে স্যালাইন পাউডার মিশিয়ে খেয়ে থাকেন, কারণ বেশি পানিতে পাউডার মেশালে পানির স্বাদটা ভালো লাগেনা। আবার অনেকে মনে করেন, অল্প পানিতে বেশি স্যালাইন মেশালে হয়ত সেটা বেশি কার্যকরী হবে। প্রকৃতপক্ষে এটা অত্যন্ত বিপদজনক কাজ।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কম বা বেশি পানিতে স্যালাইন মেশালে যেসব ক্ষতি হতে পারেঃ
কম পানিতে স্যালাইন মেশালে যা হয়ঃ
➤ নির্দিষ্ট পরিমানের চেয়ে কম পানিতে পাউডার দিলে লবণ-পানির অনুপাত ঠিক থাকেনা, লবণের ঘনত্ব বেড়ে যাবে।
➤ অল্প পানি খেলেও শরীরে লবণের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়, যার ফলে ব্রেইনের কোষ থেকে পানি বের হয়ে আসবে। এর ফলে কোষগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
➤ পানিশূন্যতা আরও বেশি হবে।
➤ ছোট বাচ্চাদের এভাবে স্যালাইন খাওয়ালে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বেশি পানিতে স্যালাইন মেশালে যা হয়ঃ
➤ স্যালাইনের ঘনত্ব কমে যায়।
➤ পানি বেশি হলে এই দ্রবণ হয়ে যাবে হাইপোটনিক যার ঘনত্ব শরীরের তরলের চেয়ে কম।
➤ বেশি বেশি পানি কোষে চলে যাবে।
➤ শরীরের কোষ ফুলে উঠে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
কীভাবে বানাবেন স্যালাইনঃ
➤ শুরুতে অবশ্যই দুই হাত, স্যালাইন বানাবেন যে পাত্রে সেটি এবং চামচ ভালোমতো পরিষ্কার করে নিতে হবে।
➤ প্রথমে পাত্রে ২ পোয়া বা আধা লিটার বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে।
➤ তাতে প্যাকেটের পুরো মিশ্রণটিই ঢেলে দিন।
➤ পরিষ্কার চামচের সাহায্যে মিশ্রণ ও পানি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
➤ প্রয়োজন অনুযায়ী ডায়রিয়া ভালো হওয়ার আগ পর্যন্ত খাওয়াতে থাকুন।
সতর্কতাঃ
➤ কোনোভাবেই পানির পরিমাণ কম-বেশি করা যাবে না, এ ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল তো পাওয়া যাবেই না, বরং শিশুদের ক্ষেত্রে ক্ষতিও হতে পারে।
➤ কোনোভাবেই স্যালাইনে পানি ছাড়া অন্য কিছু যেমন দুধ, স্যুপ বা ফলের জ্যুস বা সফট ড্রিংকসও মেশানো যাবে না। এমনকি চিনিও মেশানো যাবে না।
➤ শিশুদের ক্ষেত্রে স্যালাইন কাপে করে খাওয়ানোই ভালো, কারণ ফিডিং বোতল পুরোপুরি পরিষ্কার করা ঝামেলা হয়ে যায় অনেক সময়।
➤ গরম পানিতে স্যালাইন বানানো যাবে না। স্যালাইনের পানিও গরম করা যাবে না।
➤ বানানোর পর ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্যালাইন ভালো থাকে। অর্থাৎ বানানোর ১২ ঘণ্টা পর আর সেই স্যালাইন খাওয়া যাবে না, সেটি ফেলে দিতে হবে।