।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চরাঞ্চলে শুধু চাষ করে সফলতা নয়, পশু পালন করেও সুখের ছোয়া পাওয়া যায় সেটিও করে এগিয়ে যাচ্ছেন ব্রহ্মপুত্রের তীর ও চরের মানুষ। আর এবারে নতুন একটি প্রজাতি গাড়ল পালন করে ভাগ্য বদলের সাফল্য গড়তে শুরু করেছে সাবেক সেনা সদস্য রফিকুল ইসলাম। সেনাবাহিনী থেকে অবসরে আসার পর পরামর্শ সাপেক্ষে পরিকল্পনা করেন এবং গাড়ল পালন শুরু করেন সেই সাথে সাফল্যের সাথে এগিয়েও যাচ্ছেন। গাড়ল পালনে সাফল্য অর্জন করা ব্যাক্তিটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট। তিনি কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতি গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, সাবেক সেনা সদস্য রফিকুল ইসলাম গাড়ল পালন ও বিক্রি করে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয়ের স্বপ্ন নিয়ে গড়ে তোলেন গাড়লের খামার। গাড়ল পালনে ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করায় সফলতার স্বপ্ন এখন রুপ নিচ্ছে বাস্তবে।
গত বছরে গাড়ল সম্পর্ক ধারন নিয়ে গাড়ল পালন শুরু করেন জানিয়ে সাবেক সেনা সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি প্রথমে সিদ্ধান্ত নেন গরু ও ভেড়ার খামার করার। পরে গাড়ল সম্পর্কে জেনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গাড়লের খামার গড়ে তোলেন। এজন্য তিনি দেশের অর্ধশতাধিক খামার ঘুরে গাড়ল পালন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেন।
তিনি আরো জানান, খামার করতে গেলে শুরুতে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। সাবেক এই সেনা সদস্য প্রথম দফায় মেহেরপুরের এক খামারির মাধ্যমে ভারত থেকে নিয়ে আসা ৫২টি গাড়ল ক্রয় করে শুরু করেন। দ্বিতীয় দফায় আরও ৩৬ টি ক্রয় করে যাত্রা শুরু করেন। পালনের দুই মাসেই খামার থেকে আয় শুরু করেন। গত ৮ মাসের এই খামার থেকে তিনি ১৪ টি বাচ্চা গাড়ল ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। এখন তার খামারে ১০২ টি গাড়ল রয়েছে। গাড়লের খাবারের বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্য খামারের পাশেই রয়েছে ঘাসের আবাদ। তার খামারের গাড়লের যাবতীয় পরিচর্যা ও চিকিৎসা তিনি নিজেই করেন।
এই খামারি বলেন, গাড়ল, ছাগল বা ভেড়ার চেয়ে অনেক বেশি লাভজনক। এটি অনেক লাভজনক, একটি খাবার উপযোগী গাড়ল ৪০ কেজি থেকে ১২০ কেজি ওজনের হতে পারে।
প্রাণি বিশেষজ্ঞদের মতে, গাড়ল দেখতে অনেকটা ভেড়ার মতো। তবে এরা আকারে এবং ওজনে ভেড়ার চেয়েও বড়। এরা আসলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাগপুরের ভেড়ার ক্রস ব্রিড। এরা মাত্র এক বছর বয়স থেকে বাচ্চা দেওয়া শুরু করে। সাধারণত বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘গাড়ল পালন অত্যন্ত লাভজনক। কুড়িগ্রামের ভূ-প্রকৃতি গাড়ল পালনের জন্য উপযোগী। এর মাংসের পরিমাণ অনেক বেশি। আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি গাড়ল পালনে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।
গাড়ল সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, শুনেছি এটি পালন অনেক লাভ জনক, আর চিলমারীর চরাঞ্চলের জন্য উপযোগী।
তিনি আরো বলেন, চরাঞ্চলের মানুষজন গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া পালনে যেমন সাফল্য অর্জন করছেন এবার গাড়ল পালনে বেশি লাভজনক হবেন বলে আশা করছি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/জুন/০৩/২৩