।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে শুরু হয়েছে ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙন। প্রায় দেড় মাসের চেষ্টার পরও ব্রহ্মপুত্রের গ্রাস থেকে রক্ষা করা যায়নি কমিউনিটি ক্লিনিক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ৩৬ বসতি। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চিত্র এমনই।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, অব্যাহত ভাঙনে গত এক মাসে অন্তত ৩৬ পরিবারের বসতভিটা ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে চলে গেছে। ভেঙেছে মসজিদ। ভাঙন হুমকিতে আছে আরও শতাধিক পরিবার। অব্যাহত ভাঙনে ইউনিয়নের চর ভগবতীপুরের স্থাপিত উপজেলা প্রশাসনের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নদের গ্রাসে বিলীনের অপেক্ষায় ৬ নং ওয়ার্ডের ভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিক।
চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রে যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন না থামলে আরও অগণিত বসতি নদের গর্ভে চলে যাবে। ভাঙনের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা ভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকটি নদের গর্ভে পতিত হওয়ার অপেক্ষায়। ক্লিনিকের পাকা ভবনটি নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হলেও আইনি জটিলতায় তা সম্পন্ন হয়নি।’
বসতভিটা হারানো পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘ আমরা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করেছি। দুই এক দিনের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনে জমা দেওয়া হবে।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দেড় মাস ধরে চেষ্টা করেও ভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেল না। ক্লিনিক সহ স্থানটি রক্ষায় বালুভর্তি প্রায় চার হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হলেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। আবার কবে ওই চরের মানুষ ক্লিনিক ভবন পাবে তা বলা মুশকিল।’
‘আপাতত ক্লিনিক সাপোর্ট গ্রুপের সভাপতির বাড়িতে ক্লিনিকের সব সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা সেখান থেকে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারবেন।’ ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু রাখার প্রশ্নে জানান ডা. নজরুল।
এদিকে, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নেও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ইউনিয়নের একের পর এক বসতি, স্থাপনা ও আবাদি জমি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ছে। তবে মাত্রা কম। চরাঞ্চলে কিছু ভাঙন রয়েছে। ভগবতীপুরে চরের ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ী কার্যক্রমের জন্য প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে ওই মূল্যমানের স্থাপনা ও সম্পদ নেই।’
চলমান ভাঙন থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক ও বসতি রক্ষার উদ্যোগ প্রসঙ্গে এই নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘ আমরা কিছু অস্থায়ী প্রতিরোধমূলক কাজ করেছিলাম। খোঁজ নিয়ে দেখি এখন কী অবস্থা।’
//নিউজ//কুড়িগ্রাম//চন্দন/মে/২৯/২৩