।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
বছরের পর বছর থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ চিলমারীর ভাসমান তেল ডিপোতে। তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় ন্যায্য মূল্যে তেল পাচ্ছেনা সুবিধাভোগীরা। সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধাসহ উত্তরের মানুষজন। চড়ামূল্যে তেল ক্রয় করে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক। ইতি পূর্বে কৌশলে সরিয়ে নেয়া হয়েছে যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর দুটি বার্জ। ৩ বছর পেড়িয়ে গেলেও তেল সরবরাহ না করে কোম্পানী দুটির বাকি বার্জদুটিও মেরামতের অযুহাতে চিলমারী থেকে সরিয়ে নেয়ার পায়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় ডিলার ও সচেতন মহল।
জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের মানুষের জ্বালানী তেলের চাহিদা মেঠানোসহ ন্যায্য মূল্যে তেল সরবরাহের জন্য ১৯৮৯ সালে চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদের উপর স্থাপন করা হয় ৩টি ভাসমান তেল ডিপো (মেঘনা, যমুনা ও পদ্মা)। বিভিন্ন অযুহাতে পদ্মাকে সরিয়ে নেয়া হলেও যমুনা ওয়েল কোম্পানী লিঃ ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ তখন থেকে নিয়মিত ভাবে উত্তরের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় তেল সরবরাহ করে আসছে। এই ডিপোদুটি থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ব্যারেল তেল সরবরাহ হয়ে থাকতো। লক্ষ লক্ষ লিটার তেলের চাহিদা পূরন করে আসছিল এবং ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের চাহিদাও পূরন করে আসছিল। কিন্ত হঠাৎ করেই গত তিন বছর থেকে চিলমারী ভাসমান ডিপোতে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে কৃষকসহ জ্বালানী তেলের উপর নির্ভশীলরা।
তেল মিললেও গুনতে হচ্ছে চড়া মূল্য। চড়া মূল্যে তেল কিনে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকগন। চিলমারী ভাসমান ডিপোতে তেল না থাকায় বাঘাবাড়ি, পার্বতীপুরসহ বিভিন্ন ডিপো থেকে ১ লড়ি তেল চিলমারীতে আনতে প্রায় ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে ডিলারদের। এছাড়াও স্থানভেদে খরচ কমবেশি হয়ে থাকে। একদিকে অতিরিক্ত খরচ অন্যদিকে চড়া মূল্যে তেল কিনতে হচ্ছে কৃষকদের।
ডিপো সূত্রে জানা গেছে, যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ একটি জাহাজ সর্বশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে তেল নিয়ে এসেছিল এবং মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর একটি জাহাজ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে তেল নিয়ে চিলমারী এসেছিল তবে তা দ্রুত শেষ হয়ে যায়। আর সেই থেকে চিলমারী ভাসমান ডিপোতে তেল সরবরাহ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। তখন থেকে চিলমারী ভাসমান ডিপো থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে উত্তরের মানুষ। তেল সরবরাহ বন্ধ রেখে ডিপোদুটি চিলমারী থেকে সরিয়ে নেয়ার পায়তারা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতি পূর্বে বিভিন্ন অযুহাতে যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ এর একটি বার্জ হেগী-১ ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর বার্জ হেগী-৪ নিয়ে যাওয়া হলেও তা চিলমারীতে আর পাঠানো হয়নি। পূর্বে নিয়ে যাওয়া বার্জদুটি না পাঠিয়ে আবারো উক্ত কোঃ দুটির বাকি দুটি বার্জ বিভিন্ন অযুহাতে সরিয়ে নেয়ার পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি সূত্রে জানায়, চিলমারী ভাসমান ডিপো যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ এর বর্তমান বার্জটিতে ৫লক্ষ ২৫ হাজার লিটার ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর বার্জে ৪লক্ষ ৪৫ হাজার লিটার তেল ধারন করতে পারে। কোম্পানী দুটি ইচ্ছা করলে তদন্ত সাপেক্ষে বার্জের ক্রটিগুলো চিলমারীতে সেরে নিয়ে নিয়মিত ভাবে তেল সরবরাহ করলে আবারো হাসি ফুটে উঠবে উত্তরের মানুষের মুখে।
কৃষক জাহিদ, মমিনুলসহ অনেকে বলেন, হামরা কি কমু এলাকায় মন্ত্রী পাইলাম, ঘোষণা হইলো বন্দরের, হচ্ছে তিস্তা সেতু আবার শুনতেছি হবে ব্রহ্মপুত্রের উপর ব্রীজ আর বন্ধ হয়ে আছে তেল সরবরাহ বুজি না বাহে।
স্থানীয় ডিলাররা জানান, এর আগে মেরামতের অযুহাতে দুটি বার্জ সরিয়ে নেয়া হয়েছে আবার দুটি কোম্পানী বাকি বার্জ দুটি মেরামতের জন্য নিতে চাচ্ছে তাই আমরা চিন্তায় আছি চিলমারী ভাসমান ডিপোর অস্থিত নিয়ে।
কথা হলে যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ এজিএম জাহিদ মুরাদ বলেন, একটি টিম চিলমারী ভাসমান ডিপোতে পরির্দশনে গিয়েছিল তারা রিপোর্ট দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে, তবে ভাসমান ডিপোর স্থলে শোর্ড/শোর ডিপো স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে।
মেঘনা পেঃ লিঃ এর একজন কর্মকর্তা জানান, বিষয়গুলো উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ জানানো হয়েছে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/মে/২৯/২৩