।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
লিভার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহত্তম অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। দীর্ঘদিনের অবহেলায় লিভারে জমতে পারে দূষিত পদার্থ। তাই লিভারকে পরিষ্কার রাখা জরুরি। আমাদের পুরো শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দেয় লিভার। লিভার এমন এক অঙ্গ যেটি নিজেকে পরিষ্কার ও পুনর্নবীকরণ করতে পারে। এমনকি এই অঙ্গ ওজন কমাতে সহায়তা করে ও শরীরের সুস্থ ক্রিয়াকলাপে সহায়তা করে। তবে আমাদের প্রতিদিনের কিছু ভুলে লিভারে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
লিভারে যদি অতিরিক্ত টক্সিন বা বর্জ্য জমে থাকে, সেক্ষেত্রে এই অঙ্গ সঠিকভাবে তার কাজ সম্পাদন করতে পারে না। ফলে মারাত্মক সব রোগ যেমন- ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস এমনটি লিভার ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নির্দিষ্ট কিছু খাবার আছে, যার মাধ্যমে আপনি প্রাকৃতিকভাবেই লিভার ডিটক্স অর্থাৎ পরিষ্কার করতে পারবেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক লিভার পরিষ্কার করার খাবার গুলোঃ-
সবুজ শাক
শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে দারুণ কার্যকরী হলো সবুজ শাক। যার মধ্যে পালংশাক ও বাঁধাকপি অন্যতম। এগুলো পিত্ত উৎপাদন বাড়ায়। যেহেতু সব শাকসবজিতে ফাইবার, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে, তাই এগুলো লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া শাকসবজিতে উচ্চ ক্লোরোফিল বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি থাকায় তা রক্তপ্রবাহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে।
সাইট্রাস জাতীয় ফল
নানা ধরনের ভিটামিনে ভরপুর হলো সাইট্রাস জাতীয় ফল। এটি লিভারের দূষিত পদার্থ দূর করতে কাজ করে। কিশমিশ থেকে শুরু করে নানা ধরনের লেবু খেলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। লেবুতে থাকা অ্যান্টঅক্সিডেন্ট লিভারের প্রদাহ কমাতে কাজ করে।এছাড়া ব্লুবেরি, ক্যানবেরিও খেতে পারেন।
ক্রুসিফেরাস সবজি
কিছু উল্লেখযোগ্য ক্রুসিফেরাস শাকসবজি গ্লুকোসিনোলেটের একটি চমৎকার উৎস। যা লিভারকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক এনজাইম তৈরি করতে সাহায্য করে ও শরীর থেকে টক্সিনসহ অন্যান্য টক্সিন কার্সিনোজেনকে বের করে দেয়। ব্রোকলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, কেল ও ব্রাসেলস স্প্রাউট নিয়মিত খেলে লিভারে টক্সিন জমে না ও জমে থাকা টক্সিন বের হয়ে যায়।
রসুন ও আদা
আমাদের প্রতিদিনের রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় রসুন। এটি বিভিন্ন অসুখে ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। এই ভেষজে আছে ব্যাকটেরিয়ানাশক গুণ। এদিকে আদায় থাকে সেলেনিয়াম নামক এক ধরনের উপকারী উপাদান। এই সেলেনিয়াম কিছু উৎসেচক শরীর থেকে বের করে দিতে পারে। ফলে লিভার পরিষ্কার থাকে।
অলিভ অয়েল
লিভারের জন্য অন্যতম উপকারী খাবার হলো অলিভ অয়েল। এটি শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে। এই তেল কিছু এনজাইম শরীরে বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে লিভার থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। রান্না ও বিভিন্ন খাবার তৈরিতে ব্যবহার করতে পারেন এই তেল।
হলুদ
হলুদ একটি ঐতিহ্যবাহী মসলা যার বিভিন্ন থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য আছে। এতে শক্তিশালী প্রাকৃতিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আছে। নিয়মিত ব্যবহারে লিভারের ক্ষতির লক্ষণগুলো কমতে থাকে। ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় দারুণ উপকারী হলুদ।
চর্বিযুক্ত মাছ
বেশিরভাগ সামুদ্রিক খাবার লিভারকে ডিটক্স বা পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। সামুদ্রিক মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যেমন- স্যামন, সার্ডিন, টুনা ও ট্রাউট ইত্যাদি মাছ লিভারের চর্বি ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। গবেষণা অনুসারে, এই মাছগুলো লিভারের এনজাইমের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে ও অতিরিক্ত চর্বি জমতে বাঁধা দেয়।