।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ঘোষণা আসে জেগে উঠে চিলমারীবাসী। মাস যায়, যায় বছর, কিন্তু সীমাবন্ধ থাকে ঘোষণায় ঝিমিয়ে পড়ে আবারো। বছরের পর বছর থেকে ভোগান্তিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ। দিন বদলের পালায় যেন পিছিয়ে থাকছে চিলমারী। দেশের বিভিন্ন স্থানে উন্নয়ন হলেও যোগাযোগে উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি চিলমারীতে। জন্ম থেকে যেন পেছিয়ে চিলমারীর রমনা বাজার রেলপথ। ভাঙ্গাচোরা স্টেশনটিও। স্লিপারের সাথে লাইনের সংযোগের জন্য নাট-বল্টু থাকার কথা থাকলেও অনেক স্থানেই তা নেই। চিলমারী রমনা থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত লাইনের কোন কোন স্থানে পাথরের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। ট্রেন আসলেও থাকছে ধীরগতি তবে রয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
জানা গেছে, চিলমারীর দুটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে বালাবাড়ি হাট ও রমনা বাজার স্টেশন। স্বাধীনতার পর থেকে রয়েছে বেহাল দশায়। লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। স্টেশনের সাথে রেলপথেও পায়নি উন্নয়নের হাওয়া। ট্রেন চললেও থাকছে ধীরগতি যা গ্রামের ভাষায় “হামার ট্রেন চলে গরুর গাড়ির নোহান”। লালমনিহাটের তিস্তা থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার রেলপথের বেহাল দশার কারণে ঝুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর ট্রেন চলাচল করছে এই রুটে। ফলে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা নিয়েই যাত্রীরা এই রেলপথ দিয়ে যাতায়াত করে। যদিও তিস্তা থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত নামে মাত্র সংস্কার করা হলেও কুড়িগ্রাম থেকে চিলমারী রমনা পর্যন্ত রেলপথ রয়েছে ঝুঁকিতে।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে রেলমন্ত্রী চিলমারী রমনা স্টেশন পরির্দশন কালে রেলপথ সংস্কার করার কথা বললেও দীর্ঘদিন পর কুড়িগ্রাম থেকে উলিপুর পর্যন্ত সংস্কারের কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ যদিও রয়েছে নানা অভিযোগ। কিন্তু উলিপুর থেকে চিলমারী রমনা পর্যন্ত সংস্কার কবে হবে জানা নেই কাহারো।
সূত্র জানায়, তিস্তা থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের বেহাল দশার কারণে সময়মত ট্রেন যাতায়াত না করায় নানা ভোগান্তি আর বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। রেল লাইনের স্লিপার, পাথর ও কোনও কোনও স্থানে মাটি ও গাইড ওয়াল সরে যাওয়ায় নির্ধারিত গতির চেয়ে অনেক কম গতিতে ট্রেন চলাচল করছে। স্লিপারের সাথে লাইনের সংযোগের জন্য নাট-বল্টু থাকার কথা থাকলেও অনেক স্থানেই তা নেই। লাইনের বেশির ভাগ স্থানে পাথরের কোন অস্তিত্ব নেই। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় রকম দুর্ঘটনা। তাই সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়ে কুড়িগ্রাম থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত মাত্র ৩২ কিলোমিটার পথ যেতেই প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। লাইন জরাজীর্ণ হওয়ার কারণে ধীর গতিতে ট্রেন চালাতে হয়। রেল স্টেশন অফিস জানায়, বর্তমানে কুড়িগ্রামে যে লোকাল ট্রেন চলাচল করছে। এই একটি ট্রেন ভিন্ন নামে কুড়িগ্রামে যাতায়াত করছে। ট্রেনটি বিকালে লালমনির হাট থেকে ছেড়ে কুড়িগ্রাম থেকে শাটল হয়ে কাউনিয়া পৌঁছে এবং কাউনিয়া থেকে চিলমারী কমিউটার হয়ে গভীর রাতে রমনা বাজার স্টেশনে পৌঁছে পরের দিন সকাল ৮টায় চিলমারীর রমনা বাজার থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
ট্রেন চালক আরিফুল হক বলেন, রমনা বাজার থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত ঘন্টায় ২০কিঃমিঃ বেগে চলার অনুমতি দেয়া হয়েছে যদিও রেল লাইনের সমস্যার কারনে ঘন্টায় ১২ থেকে ১৫ কিঃ মিঃ বেগে চালাতে হয়। এছাড়াও লাইনের সমস্যার কারনে খুব ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চালাতে হয় একটু গতি বেশি বা কমবেশি হলে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট পশ্চিম অঞ্চল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) বলেন, “আমরা জানিয়েছি লাইনের অবস্থা খারাপ। উলিপুর পর্যন্ত লাইন মেরামতের কাজ চলছে। তবে আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে এই রেলপথে বড় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করি।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/মার্চ/২৬/২৩