।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
মানসিক রোগগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ বা ব্যাধি হলো ফোবিক অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার। স্পেসিফিক ফোবিয়াকে এর আরেকটা রূপ বলা যায়। এ রোগের ক্ষেত্রে রোগীর অহেতুক প্রচণ্ড ভীতি তৈরি হয়। খুব বেশি ভীতির মধ্যে যখন রোগী বসবাস করে তখন মাঝে মাঝে তার মধ্যে প্যানিক অ্যাটাকের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। প্রতি দশজনের মধ্যে একজন জীবনে কোন না কোন সময়ে প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হন।
প্যানিক অ্যাটাক কি
প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে ভীতি ও উদ্বেগের অনুভূতি যা হঠাৎ করেই আমাদের হতবিহ্বল করে দিতে পারে এবং সাধারণত এর সঙ্গে হালকা মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও হার্টবিট বেড়ে যাওয়ার মতো তীব্র শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অনেক শিশু আতঙ্কঅনুভব করে, যেমন সে মনে করতে পারে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে। এমনকি যখন প্রকৃতপক্ষে কোনো বিপদ থাকে না, তখনও এই অনুভূতি হতে পারে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, প্যানিক অ্যাটাকের ক্ষেত্রে শরীরের সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম অত্যধিক সক্রিয় হয়ে যায়। সাধারণত প্যানিক অ্যাটাকের স্থায়িত্ব হয় ১০ মিনিট। এরপর শারীরিক প্রতিক্রিয়া কমতে থাকে। চিকিৎসকেরা জানান, প্যানিক অ্যাটাককে ভয়াবহ মনে হলেও শরীরের ক্ষতি হয় না। তবে প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হলে খুব দ্রুত তা থামানোর চেষ্টা করতে হবে।
প্যানিক অ্যাটাক হলে যা করবেনঃ-
➤ প্যানিক অ্যাটাক শুরু হওয়া মাত্র লম্বা করে শ্বাস নিন। এরপর আস্তে করে ছেড়ে দিন। মস্তিষ্ক অক্সিজেন পেতে শুরু করলে আস্তে আস্তে আক্রমণের তীব্রতা কমে আসবে।
➤ পানি শরীরকে শান্ত করে। ঠাণ্ডা পানি স্নায়ুকে শান্ত করতে সাহায্য করে। সম্ভব হলে পানি দিয়ে মুখ ও চোখ পরিষ্কার করে আসুন। এতে শরীর যেমন শান্ত হবে, প্যানিক অ্যাটাকের মাত্রাও আস্তে আস্তে কমে আসবে।
➤ একবার প্যানিক অ্যাটাক দেখা দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে পরবর্তী আক্রমণও হতে পারে। প্রথম অ্যাটাকের তুলনায় দ্বিতীয় অ্যাটাক আরও তীব্র হতে পারে। যে কারণে পরবর্তী অ্যাটাকের আগেই নিজের সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যান।
➤ প্যানিক অ্যাটাকের সময় মন বড্ড বিক্ষিপ্ত থাকে। সম্ভব হলে পছন্দের মানুষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করুন। এতে করে বিক্ষিপ্ত মন শান্ত হবে, যা প্যানিক অ্যাটাকের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
➤ যে কাজটি করলে মন শান্ত হয়, সেটি করার চেষ্টা করুন। মন বিক্ষিপ্ত থাকা অবস্থায় কাজ করা অনেকটা অসম্ভবই বটে, কিন্তু পছন্দের গান গাওয়া বা কাজ করা প্যানিক অ্যাটাক থেকে দ্রুত প্রশান্তি দেয়।
➤ প্যানিক অ্যাটাকের সময় মনে হতে থাকে, আপনি আপনার শরীরের ওপর থেকে সব নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন। সে সময় মাংসপেশি শিথিল করার পদ্ধতি শরীরের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। প্যানিক অ্যাটাক হলে শুয়ে পড়ে শরীরের মাংসপেশিকে হালকা করার চেষ্টা করুন। এতে করে প্যানিক অ্যাটাকের তীব্রতা অনেকাংশে কমে আসে।