।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর দুই মাসের বেশি সময় পার হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় গুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা।
খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা গেছ, ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩শ ৪৪ মেট্রিক টন। একজন কৃষক প্রতি কেজি ধান ২৮ টাকা দরে বিক্রি করতে পারবেন। নিয়ম অনুযায়ী কৃষকেরা অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদনও করেছেন। লটারীর মাধ্যমে কৃষকদের নামের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের মোবাইলে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে ধান ক্রয়ের বিষয়টি জানানো হয়। গত ১৭ নভেম্বর ২০২২ সালে ধান ক্রয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়, যার মেয়াদ শেষ হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর আরো ৭দিন সময় বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু সরকারি মূল্যের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রয়ের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, আগের বছরগুলোয় ধানের সরকারি দর বাজারের চেয়ে বেশি থাকায় প্রকৃত কৃষকরা সুযোগ পাননি। ফলে এবার অনেকে খোঁজ রাখেননি। যাঁরা গুদামে ধান বিক্রি করেছেন, তাঁদের রয়েছে তিক্ত অভিজ্ঞতা। পদে পদে বাড়তি টাকা দিতে হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ২৪ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছিল। ফলনও ভালো হয়েছে। মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২শ হেক্টর জমিতে ধান বেশি চাষ করা হয়েছে।
পৌরসভার কৃষক আলম মিয়া জানান, ২শ শতক জমিতে ধানের আবাদ করেন তিনি। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অংশ ধান বিক্রি করেন। আগে দু-একবার খাদ্যগুদামে ধান বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন। তবে কর্মকর্তাদের অসহযোগিতায় ব্যর্থ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ধান ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
থেতরাই ইউনিয়নের কৃষক আশরাফ আলী খন্দকার ও মোজাফফর রহমান অভিযোগ করে বলেন, অন্যান্য বছরে গুদামে কৃষকের নাম ব্যবহার করে কমিশনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহে বেশি আগ্রহী ছিল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ মৌসুমে বাজার মূল্যে বেশি থাকায় গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই কারো।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মহসিন আলী (অতিরক্তি দায়িত্ব) দাবি করেন, সরকার নির্ধারত মুল্যের চেয়ে বাজারে ধানের মূল্য বেশি থাকায় কৃষকরা গুদামে ধান দিচ্ছেন না। কৃষকরা ধান না দিলেও আমরা চাল ক্রয় করে চাহিদা পূরন করতে পারবো। তবে তিনি কৃষকদের হয়রানী ও কমিশনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিসবাহুল হুসাইন বলেন, সরকারের মূল উদ্দেশ্য কৃষকরা যেনো ধানের ন্যায্য মূল্য পায়। বর্তমানে সরকারি মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ নেই। তবে এতে তেমন কোন ক্ষতি হবে না।
//নিউজ/উলিপুর//চন্দন /মার্চ/০৪/২৩