।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
শরীর ভালো রাখতে সবজির জুড়ি নেই। তবে সবজি মানেই যে উপকারী, এমন নয়। এমন কিছু সবজি আছে যা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। আর শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে গাউট বা গেঁটে বাত, কিডনির সমস্যা বা কিডনির পাথরের সমস্যা হতে পারে।
লক্ষণ
অত্যাধিক প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। অধিকাংশ চিকিৎসকের মতে, যাঁরা নিয়মিত মাছ-মাংস খেয়ে থাকেন, তাঁদের ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার ঝুঁকি বেশি। অত্যধিক মদ্যপানও ইউরিক অ্যাসিডের কারণ হতে পারে। আর ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই গাঁটের ব্যথা অনিবার্য। তবে মনে রাখবেন, শরীরের গিরায় গিরায় ব্যথা, সারা শরীর ব্যথা বা কামড়ানো ইত্যাদি ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার লক্ষণ নয়।
মূলত ইউরিক অ্যাসিড বেশি প্রভাব ফেলে হাড় ও কিডনির উপরেই। খাওয়া-দাওয়ায় একটু হ্রাস টানলেই এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। তবে ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোনও ধারণা নেই। সে ক্ষেত্রে এই কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর রাখতেই হবে।
➤ শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বার বার প্রস্রাব পাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। কারণ কিডনি চায় শরীরে থাকা অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডকে বার করে দিতে। তবে বার বার প্রস্রাব ছাড়াও শরীরে ইউরিক অ্যাসিডে মাত্রা বেড়ে গেলে বেশি প্রস্রাব থেকে বেরতে পারে রক্তও। এছাড়া, হতে পারে ইউটিআই বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন।
➤ ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়লে প্রস্রাবের সময় অনেকেরই জ্বালা করে। এই জ্বালা এতটা বেশি হয় যে মানুষটি প্রস্রাব আসলেও অনেক সময় করতে চান না। এর থেকে কিডনিতে পাথরও হতে পারে।
যেভাবে ঠেকাবেন রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাঃ-
➤ ওজন বেশি থাকলেও এই রোগের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই সঠিক ডায়েটের পাশাপাশি শরীরচর্চা করাও জরুরি। তবে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি বেড়ে গেলে অবিলম্বে চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। সে ক্ষেত্রে ওষুধের উপর নির্ভর করতেই হবে।
➤ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে অব্যর্থ টোটকা অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার। ১ চা চামচ ভিনেগার নিন, এক গ্লাস জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে অন্তত ২-৩ বার এই মিশ্রণ পান করুন নিয়মিত। উপকার পাবেন।
➤ অবশ্যই পানি খেতে ভুলবেন না। পানি কিন্তু ইউরিক অ্যাসিডকে ইউরিনের মাধ্যমে বের করে রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
এড়িয়ে চলবেন যেসব সবজিঃ-
বেগুনঃ বেগুন ভাজা কিংবা তরকারি অনেকেরই পছন্দের। কিন্তু ইউরিক অ্যাসিড থাকলে এই সবজি এড়িয়ে চলাই ভালো। বেগুনে থাকে পিউরিন শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া অ্যালার্জি থাকলেও বেগুন খেতে বারণ করেন চিকিৎসকরা।
পালং শাকঃ দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে হাড়ের যত্ন নেওয়া—সব কিছুতেই পালংশাকের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু ইউরিক অ্যাসিড থাকলে পালংশাক না খাওয়াই ভালো। পালংশাকে থাকা কয়েকটি উপাদান ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এ কারণে ইউরিক অ্যাসিড থাকলে পালংশাক না খাওয়াই ভালো।
টমেটোঃ বিভিন্ন রান্নায় স্বাদ বাড়াতে টমেটো জুড়ি নেই। সালাদ হিসেবেও টমেটো বেশ জনপ্রিয়। এতে বেশি মাত্রায় ডায়েটরি ফাইবার রয়েছে। টমেটোয় অক্সালেটের মাত্রাও বেশি। তাই ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের চিকিৎসকরা এই সবজিটি না খাওয়ার পরামর্শ দেন।
ঢেঁড়সঃ স্বাদের কারণে অনেকেই ঢেঁড়স খেতে পছন্দ করেন। তবে এই সবজি বেশি মাত্রায় খেলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলে ঢেঁড়শ এড়িয়ে চলাই ভালো।