।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে প্রশাসনের নাকের ডগায় জুট মিলের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে অন্য জমি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে। গত কয়েক দিন ধরে দিন রাত ড্রেজার দিয়ে বালু তুললেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী চিলমারী উপজেলায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের যেখানে গ্রেফতার ও শাস্তি প্রদান করা হচ্ছে সেখানে সরকারি জমি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৮০ সালে তৎকালীন সরকার কুড়িগ্রাম-উলিপুর সড়কের পাশে হায়াৎ খাঁ মৌজার ২৪ একর ৭৩ শতক জমি অধিগ্রহণ করে উলিপুর জুট মিল স্থাপনের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে। সেই জমিতে জুট মিলের ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন করেন বিএনপি সরকারের পাট মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ। কিন্ত সরকার পরিবর্তন হওয়ায় জুট মিল স্থাপনের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে মিলের জমিগুলো জমির পূর্ব মালিকরা চাষবাস করে আসছেন। জুট মিল স্থাপনের কাজ বন্ধ হলে সরকারিভাবে ওই জমির কিছু অংশে হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতা ও উলিপুর পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু ওই জমি নিজের দাবী করে ৪ টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে কুড়িগ্রাম-উলিপুর সড়কের পাশে অবস্থিত অন্য একটি জমি ভরাট করছেন।
জুট মিলের অধিগ্রহণ করা এলাকার আফাজ উদ্দিন (৭০) জানান, আমার জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে টাকাও দিয়েছে, জুট মিলের কাজ বন্ধ থাকায় ওই জমিতে ধান চাষ করছি। সরকার চাইলে ছেড়ে দিব।
একই এলাকার বাসিন্দা আলা উদ্দিন ও শামছুল হক জানান, সরকারের জমি চাষ করছি কিন্ত দখল করি নাই, মাটি কাটি নাই, বাড়ীও করি নাই। মেয়রের ক্ষমতা আছে তাই তারা সরকারি জমি কেটে বালু তুলে জমি ভরাট করছে। পার্শ্ববর্তী চিলমারী উপজেলায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করলে গ্রেফতার করে ও শাস্তিও দেয়। কিন্তু একই নিয়ম এখানে নাই কেন?
উপজেলার ধরনীবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ড্রেজার মালিক জুলফিকার আলী ও এরশাদ আলী জানান, প্রতি হাজার ঘনফুট বালু ২ হাজার ৪০০ টাকা চুক্তিতে তুলছি। মেয়র সাহেব আমাদের ডেকেছেন তাই কাজ করছি।
উলিপুর পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা সরকারি অধিগ্রহণকৃত জমি তার নিজের জমি দাবী করে বলেন, জুট মিলের অধিগ্রহণ করা জমি নয়, আমার মালিকানার জমিতে ড্রেজার বসিয়ে বাড়ি করার জন্য অন্য একটি জমি বালু দিয়ে ভরাট করছি।
সহকারী কমিশনার (ভুমি) মাহমুদুর রহমান জানান, বালু উত্তোলনের ব্যপারে মেয়র সাহেবের সাথে কথা হয়েছে। তিনি ওই জমি নিজের বলে দাবী করেন। তাই সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) কে তদন্ত করে রির্পোট দিতে বলেছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন রাংসা জানান, অভিযোগ পেয়ে আমি বালু তোলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বন্ধ না হয়ে থাকলে আবারও বন্ধ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।