।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
রাজীবপুর সদরের মাঠপাড়ায় ৪৮ বছর বয়সী জমেলা খাতুন ও অসুস্থ কৃষক হারুন অর রশীদের পাঁচ সদস্যের পরিবার। সকলে মিলে বসবাস করেন একটি মাত্র কুঁড়ে ঘরে। দারিদ্রতার কারণে ঠিক মত তিন বেলা খেতে পারে না এই পরিবারটি। অনেকেই সহযোগীতার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত ভাগ্যে কিছুই জোটেনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জীর্ণশীর্ণ একটি ঘরে তিন মেয়ে ও মেয়ে ঘরের নাতনী নিয়ে থাকেন জমেলা দম্পতি। ঘরের বেশিরভাগ অংশই ভাঙাচোরা। পাটকাঠি দিয়ে দেওয়া বেড়ার একদিক থেকে অন্যদিকে খুব সহজেই দেখা যায়।
প্রতিবেশীরা জানান, খুব কষ্ট করে চলে তাদের সংসার। তিন সন্তানের মধ্যে দুইজনের বিয়ে হয়েছে তার মধ্যে এক মেয়ের নাতনীকে লালন পালন করেন। ছোট মেয়ে স্থানীয় একটি আলিম মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। নিজেদের আহার জোগাতেই হিমশিম খেতে হয় এই দম্পতিকে তার মধ্যে ছোট মেয়ের পড়াশোনা খরচ তো আছেই। সব মিলিয়ে অনেক সময় অনাহারে অথবা অর্ধাহারে দিন কাটান তারা।
জমেলা খাতুন ও স্বামী হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা সরকারি কোনো সহায়তা পাই না। ”মেম্বার, চেয়ারম্যানরা আমাগোরে খোঁজ খবর নেয় না”। যখন নির্বাচন আসে তখন সবাই এসে আশ্বাস দেয় কিন্তু নির্বাচন শেষে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সাহায্যের জন্য গেলেও লাভ হয় না।
জমেলা খাতুন আরও বলেন, সরকার থেইকা কত মানুষরে ঘর দিলো আমার থাকার ঘর নাই শশুরের জমিতে এই ঘরটা কোনো রকম তুইলা আছি কেউ একটা ঘরও দিলো না। স্বামীটা চার মাস থেইকা পা ভাইঙ্গা ঘরে পইড়া আছে কামে যাওয়ার পারে না, কি খাই না খাই কেউ খবর নেয় না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হাই জানান, আমি আমার পরিষদ থেকে যে বরাদ্দ পাই সে বরাদ্দ থেকে চেষ্টা করবো তাদের সাহায্য সহযোগিতা করার।
এ বিষয়ে রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত চক্রবর্তী বলেন, আপনার মাধ্যমে আমরা জমেলা খাতুনের পরিবারের অসচ্ছলতার কথা জানতে পারলাম। আমরা প্রাথমিক ভাবে তার পরিবারের খোঁজ খবর নিতে সহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) কে পাঠাবো। চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ত্রাণ, কৃষিসহ সকল প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাদের পরিবার পরিদর্শন করে তারপর ব্যবস্থা নিবো।
//নিউজ/রাজীবপুর//সুজন-মাহমুদ/ফেব্রুয়ারি/২৫/২৩