।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
ফ্রিজ ছাড়া এখনকার দিনে আমাদের জীবন প্রায় অচল। অনেকেই ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে খাবার রান্না করে ফ্রিজে রেখে রেখে খান। কিন্তু ফ্রিজে তুলে রাখা যেসব খাবার আমরা প্রতিদিন খাই, তা কতটা সুরক্ষিত? আর যদি হয়েও থাকে তাহলে ঠিক কতক্ষণ তা ফ্রিজে রাখা যেতে পারে? এই সমস্ত খাবার অজান্তেই আমাদের শরীরের কোনো ক্ষতি করে দিচ্ছে না তো?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রান্না করা খাবার দীর্ঘ দিন ফ্রিজে সংরক্ষণ না করার পরামর্শ দেন। তাদের মতে, ফ্রিজে খাবার রাখলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়- এটা সব থেকে বড় সমস্যা। আরও একটি কারণ হল রান্নার সময় খাবারের অনেক উপাদানই নষ্ট হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন হল সবচেয়ে অস্থির এবং সহজে হারিয়ে যাওয়া পুষ্টি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় রান্নার সময়। তাপ ভিটামিন নষ্ট করে, হিমায়নের সময় শীতলতা হয় না। রান্না করা খাবার যদি বায়ুরোধী পাত্রে রাখা হয় তবে তা দুই-তিন দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
এছাড়া, সিদ্ধ বা সাধারণ ভাতে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে। কম তাপমাত্রায়ও এসব ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাত ফ্রিজে রাখলেও এক বা দুই দিনের মধ্যে খাওয়া উচিত। এছাড়া নোনতা, টক এবং মসলাযুক্ত খাবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্রিজ-বান্ধব হয়ে ওঠে।
ফ্রিজে কতদিন খাবার সংরক্ষণ করা নিরাপদঃ-
রান্না করা ভাত দু’দিনের মধ্যে খেয়ে নিতে চেষ্টা করতে হবে। ফ্রিজ থেকে বের করে গরম করতে যাওয়ার আগে অন্তত কিছুক্ষণ রুম টেম্পারেচারে রাখতে হবে। এছাড়া, রান্না করা ডাল দু’দিনের মধ্যে খেয়ে নেওয়াই ভালো। এর বেশি রাখলে ওই ডাল থেকে কখনো কখনো পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
এদিকে, কাটা ফল বা সবজি ফ্রিজে খুব বেশিদিন না রাখার চেষ্টা করতে হবে। একান্তই প্রয়োজন হলে এয়ারটাইট কনটেইনারে রাখতে হবে। ফ্রিজে রাখা কাটা পেঁপে ছয় ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে নিতে হবে। কাটা আপেল চার ঘণ্টার বেশি রাখবেন না। এর বেশি থাকলে বিপত্তি বাড়তে পারে।
এগুলো ছাড়াও চেরি সাতদিনের জন্য রাখা যেতে পারে, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং ব্ল্যাকবেরি ছয় সপ্তাহের জন্য, লেবুজাতীয় ফল এক থেকে তিন সপ্তাহের জন্য, আঙুর সাত দিনের জন্য ফ্রিজে রাখায় অসুবিধা নেই।
গোটা তরমুজ প্রায় দু’সপ্তাহের জন্য রাখা যেতে পারে। কিন্তু কাটা হলে দুই থেকে চার দিনের মধ্যে খেয়ে নেওয়াই ভালো। আনারস রাখা যেতে পারে পাঁচ-সাত দিনের জন্য, কিন্তু চেষ্টা করতে হবে বিনস্জাতীয় কিছু থাকলে তা যেন চার দিনের বেশি ফ্রিজে না থাকে।
এছাড়াও, কর্ন দু’দিনের জন্য, বেগুন সাত দিন, মাশরুম এক সপ্তাহের বেশি রাখা ঠিক না৷ এই নিয়ম না মানলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ফ্রিজের তাপমাত্রা হওয়া উচিত ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ডিপ ফ্রিজের ক্ষেত্রে তা মাইনাস ১৫ ডিগ্রি হওয়া দরকার। ফ্রিজে খাবার সব সময় ঢাকা দিয়ে রাখা উচিত। এছাড়া, রান্না করা খাবারের ক্ষেত্রে খাবারটি ঠাণ্ডা করে তবেই ফ্রিজে রাখা উচিত।