।। নিউজ ডেস্ক ।।
নিবন্ধিত চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও নকল ওষুধ উৎপাদন বা জ্ঞাতসারে কোনো নকল ওষুধ বিক্রি, মজুত, বিতরণ বা বিক্রির উদ্দেশে প্রদর্শন করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। নতুন প্রণয়ন করা ‘ওষুধ ও প্রসাধনী আইন, ২০২৩’-এ এমন বিধান রেখে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনের খসড়াটি অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ সংক্রান্ত পুরাতন দুটি আইনকে এক করে এবং এর সঙ্গে আরও নতুন কিছু বিষয় যুক্ত করে মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে গত বছরের ১১ আগস্ট এ আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সেটিকে আজ চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে অনুমোদনের ক্ষেত্রে একটু পরিবর্তন এসেছে। আগে যে আইনগুলো ছিল সেগুলো মূলত ওষুধ নিয়ে ফোকাস করা ছিল। কিন্তু নতুন যে খসড়াটি করা হয়েছে সেখানে কসমেটিকসও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেজন্য এই আইনটির নামকরণ করা হয় ঔষধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩।
তিনি আরও বলেন, এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এখানে ধারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বলা হচ্ছে, এখন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ থাকবে। বিষয়টি অমান্য করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনে কসমেটিকসকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কসমেটিকসের উৎপাদন, বিতরণ ও স্টোর—এগুলো আমাদের রেগুলেট করা হবে। আমাদের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর যেটা আছে সেটা কন্টিনিউ করবে ও তাদের দায়িত্ব-পরিধি এখানে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। এখানে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে। আইনে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) যে গাইডলাইন আছে, সেটি যেন আমাদের ওষুধ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হয় সে ব্যাপারে খুব জোর দেওয়া হয়েছে। আইনটিতে এ গাইডলাইন প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক করা হবে।
খসড়া আইনে শাস্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ৩০ টা অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে ও এসব অপরাধে শাস্তির কথা উল্লেখ করা আছে। অসৎ উদ্দেশে ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে শাস্তি যাবজ্জীবন পর্যন্ত। নকল ওষুধ উৎপাদন বা জ্ঞাতসারে কোনো নকল ওষুধ বিক্রি, মজুত, বিতরণ বা বিক্রির উদ্দেশে প্রদর্শন করলে সেখানেও যাবজ্জীবনের প্রভিশন রাখা হয়েছে। ওষুধে ভেজাল করলে বা কোনো ভেজাল ওষুধ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুদ, বিতরণ করলে যাবজ্জীবনের প্রভিশন রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধের ক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ বিক্রয় করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোনটা কোনটা ওভার দা কাউন্টার বিক্রি করা যাবে, সেটা বলা আছে (খসড়া আইনে)। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর লাইসেন্স অথরিটি হিসেবে কাজ করবে। কসমেটিকস উৎপাদন করতে হলেও তাদের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে।