।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
প্রায় ৪’শ বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে মুঘল আমলের ‘মজিদের পাড় জামে মসজিদ’। পরিদর্শনে ইউএনও। প্রস্তাব মসজিদটি মুঘল আমলের বা পুরাতন মসজিদ নামে নামকরণের। চিলমারী সদর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার উত্তরে মজিদের পাড়া এলাকায় মসজিদটির অবস্থান। ঈদগাহ মাঠের দক্ষিণ পাশে ধূসর বর্ণের পাথরে অসাধারণ নির্মাণশৈলীর মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। পুনঃসংস্কার করলে তা ইসলাম ধর্মাবলম্বীসহ সাধারণ দর্শনাথীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
মজিদের পাড় মসজিদের সামনে মাঠের দৈর্ঘ্য ১’শ ফুট, প্রস্ত ৮০ ফুট। মসজিদটি প্রতিষ্ঠা সর্ম্পকে তেমন কোনো জানা না গেলেও স্থাপত্য ও নির্মাণশৈলী দেখে অনুমান করা হয় এটি মূঘল আমলে তৈরি করা হয়েছিল। ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি স্থাপত্যশিল্পের অসাধারণ নিদর্শন। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ২০ ফুট আয়তনের এই মসজিদের ভিতরে ২ কাতারে ৪০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির সামনে ৩টি দরজা, উত্তর এবং দক্ষিণ মুখো ২ টি জানালা আছে। গাঁথুনির জন্য পাতলা ইট ও টালির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে চুন-সুরকি। মসজিদের ভেতরের দেয়ালে আঁকা আছে নানা ধরনের লতাপাতা ও ফুলের কারুকাজ। সেগুলো নষ্ট হওয়ার পথে। মসজিদের গাঁথুনির সময় চুন-সুরকির সঙ্গে ডালও নাকি মেশানো হয়েছিল। দিন দিন মুসল্লির সংখ্যা বাড়তে থাকায় জায়গা সংকুলন না হওয়ায় ২০১৪ সালের মাঝা-মাঝি সময়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পুরোনো মসজিদটি ঠিক রেখে সামনের দিকে নতুন করে সংস্কার করা হয়। দীর্ঘকাল থেকে এখানকার মানুষজন বিভিন্ন রোগ শোকে বা কাজের সফলতার জন্য এ মসজিদে মানত করে থাকে। আর সে কারণে মানত বিশ্বাসী মানুষেরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে মানত করে। মসজিদটির কোনো নাম না থাকলেও এই মসজিদটি ঘিরে এলাকার নাম করণ করা হয়েছে মসজিদের পাড়।
মসজিদের বিষয়টি জানতে পেরে শুক্রবার জুম্মা নামাজ আদায় করেন চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান। নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং মসজিদটির নাম মূঘল আমলের মসজিদ বা পুরাতন মসজিদ হিসাবে নাম করনের প্রস্তাব উঠে। এসময় মুসল্লিরা এলাকাবাসীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সিন্ধান্ত নিবেন বলে জানান।
অন্যদিকে মসজিদটির বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ, ইমাম ও মুয়াজ্জেম এর বেতন সাপ্তাহিক শুক্রবার জুম্মার নামাজের দিন মুসল্লিদের দান ও মানতের টাকায় চলে। এলাকাবাসী বলেন, এখনো শতশত মানুষ ছুটে আসে মসজিদের উঠানে, ছবি তোলো মানত করে এবং ঘুরে ঘুরে দেখে যায়। এদিকে পুরোনো এ মসজিদে ঈদুল ফিতর ও আযহা নামাজে অসংখ্য মুসল্লি জায়গা সংকুলন না হওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন।
এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ঐতিহ্য ধরে রাখাসহ সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/ফেব্রুয়ারি/০৩/২৩