।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীতে সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করেই জনবসতি গ্রামের মাঝে এবং ২/৩ ফসলির জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণ হচ্ছে ইটভাটা। এছাড়াও ইটভাটা আইন লঙ্ঘন করে ফসলি জমির মাটি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট। সাধারণ কৃষককে নগদ টাকার লোভ দেখিয়ে সংগ্রহ করছে আবাদি জমির উপুরি ভাগের (টপ সয়েল) মাটি। দালালদের খপ্পরে পরে কতিপয় জমির মালিক ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছেন। এতে জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে ইট প্রস্তুত করার জন্য কৃষিজমি, পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে সংগ্রহ করা বা ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা নিষেধ থাকলেও তা মানছেন না কেউ। আইনের প্রয়োগ না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইট তৈরির জন্য কৃষিজমির মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর ধীরে ধীরে ইটভাটার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে ফসলি জমির প্রাণ। জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে এক শ্রেণীর দালাল দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা করে আসছে। এতে একদিকে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, অন্য দিকে ট্রাক্টর দিয়ে ইটভাটায় মাটি নেয়ায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ কাঁচা ও পাকা সড়ক।
মাছাবান্দা এলাকার মতি শরিফেরহাট এলাকার আমিনুল, ব্যাপারী বাজার এলাকার বাবলুসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে কৃষিজমি থেকে। দালালরা জমির মালিকদের মাটি কাটার জন্য ভুল বুঝিয়ে অনুমোদন ছাড়াই এসব মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় সরবরাহ করছে।
জানা গেছে, চিলমারীতে পাঁচটি ইটভাটার মধ্যে চলমান রয়েছে ৩টি। প্রতিটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে আবাদি জমি ও জনবহুল এলাকায়। নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব ইটভাটার মালিকেরা একের পর এক ফসলি জমির প্রাণ ধ্বংস এবং গাছপালা কেটে পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
মাটি বিক্রয়কারী কয়েকজন কৃষক জানান, পাশের জমির মালিকেরা গত বছর মাটি বিক্রি করায় তাদের জমি উচু হয়ে যাওয়ায় তারাও মাটি বিক্রি করছেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, এক বিঘা জমির উপরিভাগের মাটি ১২-১৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভাটা মালিকেরা এক ফুট পর্যন্ত ওপরের মাটি কেটে নেয়ার কথা বললেও সুযোগ বুঝে দেড় ফুট এবং অনেক সময় এর চেয়েও বেশি কেটে নিচ্ছে।
সরেজমিন শরিফেরহাট, মাছাবান্দা, বালাবাড়িহাট ও টিএনটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায় উক্ত এলাকায় নির্মিত ভাটাগুলো সরকারী নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করেই জনবসতি ও ২/৩ ফসলি জমিতে নির্মান করা হয়েছে। তবে ভাটার মালিকেরা এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, কৃষি জমির মাটি ইট ভাটায় ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। আর আইন না মেনে কেউ কৃষি জমির উপরি ভাগের মাটি ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/ফেব্রুয়ারি/০১/২৩