।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীতে নামেই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা থাকলেও বাস্তবে এর কোন কার্যক্রম নেই। সংস্থাটিরও নেই কোন ঠিকানা। সৃষ্টিলগ্ন থেকে দুই ব্যক্তি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রীড়া অনুরাগিদের অভিযোগ, কাগজে কলমে সংস্থাটির অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে এর কোনো কার্যক্রম নেই। তবে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হোসেন আনসারী বলেন, আর্থিক সংকটের কারণে টুর্নামেন্ট ব্যতিত খেলার আয়োজন করার সুযোগ হয়না। ২০০০ সালের পর কমিটি গঠন করা হয়েছিল, কাগজ না দেখা পর্যন্ত বলতে পারবেন না বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, চিলমারীর ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় চিলমারী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। পদাধিকারবলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি। গঠনতন্ত্রে স্থানীয় ও বিভিন্ন সরকারী বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে ৪ বছর পরপর কমিটি করার বিধান রয়েছে। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয় ওবাইদুল হক খাঁজাকে। তিনি ২০০০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ হোসেন আনসারী। বর্তমানে তিনি উলিপুর উপজেলা থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। যার প্রভাব পরেছে সংস্থার কার্যক্রমে। দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যক্তিকে স্বপদে রেখে কমিটি গঠন করায় মূখ থুবরে পড়েছে সংস্থাটি।
স্থানীয় ক্রীড়ানুরাগীদের অভিযোগ, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা খেলাধুলায় সম্পৃক্ত হতে না পারায় চিলমারীর ক্রীড়াঙ্গন হারাচ্ছে তার নিজস্বতা। আগ্রহ আর উদ্দীপনা হারিয়ে খেলাধুলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ক্রিড়ামোদি তরুণেরা। তরুণ ও যুব সমাজ দিনের পর দিন মোবাইল গেমস ও মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্রীড়া সংস্থাটির যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে নেই কোন মানসম্মত মাঠ। চিলমারী সরকারী কলেজ মাঠে উপজেলার ক্রীড়াযজ্ঞের বেশির ভাগ আয়োজন করা হলেও বর্তমানে মাঠটির বেহাল দশা। খানাখন্দে ভরা মাঠের উত্তর ও পূর্ব দিকের দু’পাশে ভাঙ্গন, মাঠের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। মাঠটিতে গরু ছাগলের অবাদ বিচরণ।
মাঠটি এলাকার তরুণ সমাজ নিজেরা চাঁদা দিয়ে কোন রকমে খেলার উপযোগি করলেও প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। এছাড়া কলেজটি পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় বছরের অধিকাংশ সময় মাঠে গড়াতে পারে না কোন খেলা। জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল অথবা জেলা ক্রীড়া সংস্থার উপজেলা ভিত্তিক কোন আয়োজন থাকলে কিছুটা সময় সচল থাকে সংস্থাটি। একারণে মাঠ পর্যায়ে উঠে আসা নতুন প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদরা হারিযে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খেলোয়রা বলেন, খেলোয়ার নির্বাচনে ক্রীড়া সংস্থা সংশ্লিষ্টরা স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেন। এতে প্রতিভাবান অনেক খেলোয়ার সুযোগ না পেয়ে হারিয়ে যান। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে খেলা ধুলোয় দেয়া হয় নিম্নমানের পুরস্কার।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্রীড়া সংস্থার বিষয়ে আমার ধারণা নেই, যদিও আমি পদাধিকারবলে সভাপতি। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। তারপর কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রুকুনুজ্জামান বলেন, খেলাধুলায় সম্পৃক্ততা বাড়াতে ক্রীড়া সংস্থা ঢেলে সাজানো হবে।
//নিউজ/চিলমারী//জাহিদ/ফেব্রুয়ারি/০১/২৩