।। নিউজ ডেস্ক ।।
রৌমারীতে নুরুন্নবী নামের এক প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে গিয়ে পেটানার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এই ঘটনা ঘটেছে। পিটানোর এই দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি টিভি ক্যামরায়। পর উপস্থিত লোকজন আহতাবস্থায় ওই প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করায়। ওইদিন রাত ৮টার দিকে ওই প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামানসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযাগ করেন। এঘটনায় শিক্ষক সমাজসহ উপজেলা জুড়ে বইছে সমালাচানার ঝড়।
নির্যাতিত নুরুন্নবী উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অন্যদিক রোকনুজ্জামান রোকন সদ্য ঘোষিত আংশিক কমিটির উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক।
নির্যাতিত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী অভিযোগ করে বলেন, তাঁর সাথে বিদ্যালয়ের নিয়াগে সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও আসাদুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রশিদসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস যান তিনি। কাজ শেষে অফিসের দোতলা থেকে নেমে উপজেলা চত্বরে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও তাঁর সঙ্গীয় লোকজন জোরপূর্বক তাঁকে (প্রধান শিক্ষক) তুলে নিয়ে প্রথম পলি বাস কাউন্টারে আটকে রাখেন। এবং অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে প্রাণ নাশের হুমকি দেন। পরে মটোরসাইকেল করে ওই প্রধান শিক্ষককে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রার বিদ্যালয়ে অফিস কক্ষে নিয়ে যান। সেখান ওই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ঘটনা খুলে বলতে থাকেন। এসময় আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ক্ষিপ্ত হয়ে দু’হাত দিয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের গালে এলোপাথারি চড় থাপ্পর ও কিল ঘুষি মারতে থাকেন। এক পর্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ার থেকে উঠে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে থামান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে উপস্থিত আহত ওই প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ওই প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষককে পেটানোর বিষয়টি স্বীকার করে রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, নিয়াগ সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে ওই প্রধান শিক্ষক আমাকে দালাল বলেছেন। এসময় আমি নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে তাঁক দু’টা থাপ্পর মেরেছি।
রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাঁর ভাষ্য, আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ওই প্রধান শিক্ষককে আমার অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন। ওই প্রধান শিক্ষক কথা বলার সময় হঠাৎ তাঁকে (প্রধান শিক্ষক) চড়থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারতে থাকেন রোকনুজ্জামান রোকন । তিনি বলেন, এটা মোটেও ঠিক করেননি রোকন। বড় মাপের অন্যায় করেছেন তিনি।
তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে জানানো হয়েছে। শিগগির তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।