।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে গত দু’সপ্তাহ ধরে শৈত্যপ্রবাহের ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ঘন কুয়াশা আর অতিরিক্ত শিশির ঝড়ার ফলে সদ্য রোপনকৃত বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষকরা। বিকেল থেকে রাত পেরিয়ে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না। উত্তরীয় হিমেল ঠান্ডা হাওয়ায় স্থবির হয়ে পরেছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।
জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। গরম কাপড়ের অভাবে অনেকে কাজে যেতে পারছেন না। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার চর মাধবরাম এলাকার অটোরিক্সাচালক মজিবর রহমান (৫০) জানান, ‘বাপুরে ঠান্ডাত হাত-পাও শিক নাগি যায়। কাঁশতে কাঁশতে অবস্থা খারাপ। দুই দিন বসি আছলং। পেটের দায়ে ফির অটো নিয়া বেড়াইছি।’ একই কথা জানালেন পৌর এলাকার ঘোষপাড়ার হোটেল শ্রমিক এরশাদুল, ‘মহাজনের কথা ভোর থাকি কামোত আসা নাগবে। এই ঠান্ডাত কেমন করি বাড়ী থাকি বেইর হই। ঠান্ডা পানি নাড়তে নাড়তে গাত জ্বর ধরছে।’
এদিকে ঘন কুয়াশা আর অতিরিক্ত শিশির ঝড়ার ফলে সদ্য রোপনকৃত বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে কৃষকরা। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড় এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন ও হলোখানা ইউনিয়নের টাপুরচর এলাকার কৃষক ওমেদ আলী (৩৫) জানান, ‘রোদ না পাওয়ায় বীজতলা লালচে হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে বীজতলা পানিতে ডুবে যাচ্ছে বীজও সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে না।’ বীজতলা নষ্ঠ হয়ে গেলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সেই সাথে সঠিক সময় রোপন করা সম্ভব হবে না।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশা থেকে বীজতলা নিরাপদ রাখতে আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষীদেরকে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি বীজতলার কোন ক্ষতি হবে না।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রেজা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে টানা শৈত্য প্রবাহের ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের খুব সমস্যা হচ্ছে। তারা কাজে যেতে পারছে না। ফলে আয় বঞ্চিত হয়ে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে। প্রতিবছর বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বৃত্তবানরা গরম কাপড় দিয়ে সহায়তা করলেও এখন পর্যন্ত কোন সাড়া মিলছে না। বিশেষ করে শিশুদের জন্য গরম কাপড় ও মহিলাদের জন্য চাদরের চাহিদা রয়েছে।