।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডি’র চাল কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রতিবাদ করায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে। এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদে দু’দিন ধরে ভিজিডির চাল বিতরন করা হচ্ছে। ৩শ ৯ জন ভিজিডির কার্ডধারীকে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর দুই মাসের চাল এক সঙ্গে দেয়ায় কার্ডধারীরা ৬০ কেজি চাল পাওয়ার কথা। সেখানে প্রত্যেককে ৫০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছিল।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকালে এলাকাবাসী এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের লোকজনের সাথে তাদের মারামারি বেঁধে যায়। এতে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে তাদের মধ্যে থেকে গুরুত্বর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে
থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
ভিজিডির কার্ডধারী ভূক্তভোগী বিউটি বেগম, রুকাইয়া মিম, মল্লিকা বেগমসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, হামাক দুই মাসে ভিজিডির চাইল (চাউল) ৬০ কেজি দেওয়া কথা, কিন্তু চেয়ারম্যানের লোক ৫০ কেজি করি চাইল দিয়া কয়, ধরি ভাগো। হামরা গরিব মানুষ কিছু কবার না পায় ধরি আচচি।
এলাকাবাসী মুকুল মিয়া, ওহাব আলী, রেজাউল করিমসহ অনেকে বলেন, দুইদিন থেকে প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল কম দেয়ায় এলাকায় অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউপি চত্বরে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকালের দিকে চেয়ারম্যানের লোক ও এলাকাবাসীর মধ্যে কথা কাটা-কাটির এক পর্যায়ে মারামারি বেঁধে যায়। এতে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। আহতরা হলেন, আওলাদ মিয়া (৩৫), সাজ্জাদ হোসেন (৩৮), বাইজিদ মিয়া (৩০), জহুরুল (৪০) ও নাসির উদ্দিন (৩০)। এদের মধ্যে জহুরুল ও নাসিরের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উভয়কে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কতর্ব্যরত চিকিৎসক নাদিয়া জাহান জানান, আহত ৫ জনের মধ্যে ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রামে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্যরা চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান জানান, চাল কম দেয়ার অভিযোগ সত্য নয়। স্থানীয় কিছু বখাটে ছেলে ইউনিয়ন পরিষদে এসে এক বস্তা করে চাল দাবী করে। তাদের চাল না দেয়ায় তারা হামলা চালিয়ে আমার লোকজনকে আহত করেন। ঘটনার সময় আমি ইউনিয়ন পরিষদে ছিলাম না। মারামারির খবর শুনে ইউনিয়ন পরিষদে ছুটে আসি। মুলত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর লোকজন এই হামলার সাথে জড়িত।
উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমীন বলেন, তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদে মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মাহমুদুর রহমান জানান, মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। থানা প্রশাসন ও চেয়ারম্যানের সাথে বলে পরিস্থিতি জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।